বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৫ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

অপহরণের পর শিশুকে পিটিয়ে হত্যা, জন্মদিনে মিললো মরদেহ


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৪ মে, ২০২৩ ৬:২৯ : অপরাহ্ণ
সফিউল ইসলাম রহিম। ফাইল ছবি
Rajnitisangbad Facebook Page

চট্টগ্রাম নগরীর মোহরা এলাকায় সফিউল ইসলাম রহিম (১১) নামে এগারো বছর বয়সী এক শিশুকে অপহরণের পর পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অপহরণের চারদিন পর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বালি ও ইটচাপা দিয়ে পুঁতে রাখা ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত রহিমের প্রতিবেশী মো. আযম খান (৩২) ও তার বন্ধু মুজিবুর দৌলা হৃদয়কে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত বুধবার রাতে নগরীর হালিশহর পানিরকল এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। পরে রাত ৩টার দিকে তাদের স্বীকারোক্তিতে পশ্চিম মোহড়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি কলোনির ভেতর বালুচাপা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত বুধবার ছিল শিশুটির জন্মদিন। রহিম চান্দগাঁও থানার পশ্চিম মোহড়া এলাকার মো. সেলিমের ছেলে। স্থানীয় পশ্চিম মোহড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার ২৬ বছর বয়সী মো. আযম খান তার প্রতিবেশী ও দূর সম্পর্কের আত্মীয়।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার বিকেল থেকে রহিমের খোঁজ মিলছিল না। পরে তার বাবা সেলিম উদ্দিন থানায় জিডি করেন। ওইদিনই সেলিমকে একজন ফোন করে তার ছেলেকে অপহরণের কথা জানিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

ওই ঘটনায় তদন্তে নেমে স্থানীয় সিসি ক্যামেরায় আজম খান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে রহিমকে দেখতে পায় পুলিশ। এরপর হালিশহর থেকে বুধবার আজমকে গ্রেপ্তার করলে তিনি শিশুটিকে হত্যার কথা জানান। পরে তার দেওয়া তথ্যে পশ্চিম মোহরার স্থানীয় তৌসিফের নির্মাণাধীন কলোনি থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর বুধবার রাত ৩টার দিকে আযমের দেখানো একটি নির্মাণাধীন কলোনিতে বালিচাপা দেয়া অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছি। সে বলছে, আতশবাজি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মুক্তিপণের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছে। পরে ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৭টার দিকে মাথার পেছনে গাছ দিয়ে আঘাত করে শিশুটিকে হত্যা করেছে।’

ওসি বলেন, ‘মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করলে তো বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে রাখতো, দ্রুত মেরে ফেলতো না। বিষয়টা আসলে কী ছিল জানতে আমরা তদন্ত করছি। গ্রেপ্তার আসামির ৫ দিনের রিমান্ডও আবেদন করা হয়েছে।’

এর আগে ২৪ অক্টোবর চিপস কিনতে বের হয়ে নগরীর জামালখান এলাকায় নিখোঁজ হয় ৭ বছর বয়সী মার্জনা হক বর্ষা। এর তিনদিন পর একই এলাকার একটি নালা থেকে বর্ষার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে লক্ষণ দাশ নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। পরদিন এই ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন তার বাবা সোহেল রানা।

নিখোঁজের ৯ দিন পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িত সন্দেহে আয়াতের পরিবারের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আয়াতকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছিল বলে আদালতে জবানবন্দি দেয় আবির। এরপর পিবিআইয়ের কয়েক দফা চেষ্টায় নগরীর আকমল আলী সড়কের আশেপাশে বিভিন্ন জলাশয় থেকে আয়াতের খণ্ডিত পা ও মাথা উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ ২৯ মার্চ নগরীর আকবরশাহ এলাকা থেকে নিখোঁজের ৮ দিন ১০ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী আবিদা সুলতানা আয়নীর মরদেহ উদ্ধার করে পিবিআই। পিবিআই জানায়, আয়নীকে বিড়ালছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে পরিচিত সবজি ব্যবসায়ী রুবেল। মরদেহ উদ্ধারের একদিন আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর