শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক বাণিজ্য সংগঠনের (ডিটিও) মহাপরিচালক ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে নতুন নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের ২৪ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ পদত্যাগ করে।
গত ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর চট্টগ্রাম চেম্বার ঘিরে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চেম্বারে ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও পরিবারতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগে গত ১৮ ও ২৫ আগস্ট নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় চট্টগ্রাম চেম্বারের বিনাভোটে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ আগস্ট বিনাভোটে ওমর হাজ্জাজের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হয়।
চেম্বারের সদ্য পদত্যাগ করা পরিচালনা পর্ষদের ২৪ জন পরিচালকের মধ্যে ছয়জন নিকটাত্মীয়কে বিনাভোটে পরিচালক পদে বসিয়েছিলেন চট্টগ্রাম-১১ আসনের (বন্দর-পতেঙ্গা) আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। এরা হলেন দুই ছেলে-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ ও পরিচালক ওমর মুক্তাদির, লতিফের ভাগিনা আদনানুল ইসলাম, লতিফের মেঝো সম্বন্ধীর (স্ত্রীর বড় ভাই) মেয়ের জামাই মনির উদ্দিন, লতিফের ভাগ্নি জামাই আবু সুফিয়ান চৌধুরী এবং লতিফের বড় সম্বন্ধীর (স্ত্রীর বড় ভাই) মেয়ের জামাই সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সর্বশেষ ভোটাভুটি হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ। ওই নির্বাচনে এম এ লতিফ সমর্থিত মাহবুবুল আলম-নুরুন নেওয়াজ সেলিম পরিষদ জয়লাভ করে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো মোরশেদ-সালাম ঐক্য পরিষদ।
এর পরের পাঁচ মেয়াদের নির্বাচনে কোনো ভোটাভুটি হয়নি।
অভিযোগ আছে, এম এ লতিফের ম্যাকানিজমের কারণে গত ৯ বছর ধরে চেম্বারের ভোট হয়নি। চেম্বারের ৬ হাজার ৬২৩ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার ভুয়া ভোটার রয়েছে। এসব ভুয়া ভোটারকে লতিফ অবৈধভাবে চেম্বারের সদস্যপদ দিয়েছেন। লতিফের এসব ভুয়া ভোটারের কারণে গত পাঁচটি নির্বাচনে তার প্যানেলের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি।
আরও পড়ুন: ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও পরিবারতন্ত্রের’ কবল থেকে মুক্ত হলো চট্টগ্রাম চেম্বার