বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা ধর্ম

কথায় কথায় কসম করলে কি হবে?



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১ মার্চ, ২০২৪ ৪:৫৩ : অপরাহ্ণ

সন্দেহ-অবিশ্বাস, ঝগড়া-বিবাদ, হারানো বা চুরি হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে অনেক মানুষ মা-বাবা, সন্তান, মসজিদ, বিদ্যা, মাটি, খাবার-পানীয় ও মাথা ছুঁয়ে কসম করেন। কিন্তু ইসলাম আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করতে নিষেধ করেছে। এমনকি কোরআন ছুঁয়ে কসম করাও জায়েজ নয়।

কসম মূলত এক প্রকার সম্মান, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার যোগ্য নয়। তাই আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা জায়েজ নেই।

আল্লাহকে বাদ দিয়ে কসম করার অর্থ হলো, সে বস্তুটিকে আল্লাহর ওপর প্রাধান্য দেওয়া এবং আল্লাহ থেকে অধিক ভয় করা। এজন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা শিরকতুল্য অপরাধ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেউ অভ্যাসবশত আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে ভুলক্রমে শপথ করলে তৎক্ষণাৎ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে।’ (বুখারি ও মুসলিম হাদীস)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের পিতার নামে কসম করবে না, মাতা বা দেব-দেবীর নামেও না। কেবল আল্লাহর নামেই কসম করবে। আর আল্লাহর নামে কসম করার ব্যাপারে তোমাদের সত্যবাদী থাকতে হবে তথা মিথ্যা কসম খাবে না।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নম্বর-৩২৪৮)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-কে বাহনে আরোহণ করা অবস্থায় তার পিতার নামে কসম করতে দেখলেন। এ সময় তিনি তাদের ডেকে বললেন, ‘সাবধান! আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ কসম করতে চাইলে সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, নইলে যেন চুপ থাকে।’’ (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর-৬১০৮)

হযরত ইবন উমার (রা.) হতে বর্ণিত আরেকটি হাদীসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে কসম করলো, সে কুফরী করলো অথবা শিরক করলো।’ (তিরমিযী, হাদীস নম্বর-১৫৩৫; মিশকাত, হাদীস নম্বর-৩৪১৯)।

কসম ভঙ্গের কাফফারা কী?
আল্লাহর নামে কসম করে তা ভেঙে ফেললে বা পূরণ না করতে পারলে ‘কাফফারা’ আদায় করতে হয়।

নবীজি (সা.) নিজেও এ রকমই করতেন। সাহাবী আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন-‘আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ কোনো বিষয়ে কসম করার পর তার বিপরীত কাজ উত্তম মনে হলে আমি কাফফারা দেই এবং উত্তমটিই করি’। (সহীহ বুখারি ও সহীহ মুসলিম হাদীস)

কসম ভঙ্গের কাফফারা হলো-দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। অথবা একজন কৃতদাস মুক্ত করা (বর্তমানে যেহেতু দাসপ্রথা নেই, তাই এভাবে কাফফারাও দেওয়া যাবে না)। এভাবে কাফফারা আদায় করার সামর্থ্য না থাকলে লাগাতার তিন দিন রোজা রাখতে হবে।

যদি এর কোনোটি সম্ভব না হয়, তা হলে ধারাবাহিকভাবে তিনদিন রোজা রাখা।

আরও পড়ুন:

জোহর ও আসরের ফরজ নামাজে কিরাত চুপেচুপে পড়ার কারণ কী?

একা একা মুরগি জবাই করা কি জায়েজ

স্ত্রী কি স্বামীকে তালাক দিতে পারেন?

আজান-ইকামতে রাসুলের নাম শুনে কি আঙুল চুমু খেয়ে চোখে লাগাতে হয়?

টাখনুর ওপরে প্যান্ট গুটিয়ে নামাজ পড়লে কি হবে?

যে কুকুরের কথা কোরআনে চার বার এসেছে

মৃত ব্যক্তির পাশে বসে কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি?

অজু ছাড়া কি কোরআন স্পর্শ করা যাবে?

আজান দেওয়ার সময় মুয়াজ্জিন কানে হাত দেয় কেন? 

মহানবী (সা.) কখনো আজান দেননি কেন?

হাদীসের নামে জালিয়াতি, প্রচলিত ১০ জাল হাদিস সম্পর্কে জেনে নিন

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর