শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৯ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা ধর্ম

মৃত ব্যক্তির পাশে বসে কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি?


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ২:০১ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত আমল হচ্ছে, কারো মৃত্যু হলে তার চারপাশে বসে নারী-পুরুষ সকলে মিলে কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকে। সূরা ইয়াসীন কিংবা বিশেষ বিশেষ সূরা পাঠ করতে থাকে।

অথচ এটি কোনো হাদীস ভিত্তিক আমল নয়। উক্ত আমলের পক্ষে কোনো সহীহ দলিল নেই।

কারো জন্য কোরআন তেলাওয়াত কিংবা কোরআন খতম করলে তিনি সওয়াব পাবেন-এরূপ কোনো কথাও কোনো সহীহ বা গ্রহণযোগ্য হাদীসে বর্ণিত হয়নি।

কোনো মৃত মানুষের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণ কখনো কোরআন তেলাওয়াত কিংবা কোরআন খতম করেননি।

হাদীসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করবে সে এর ফজিলত পাবে। যে কোরআনের একটি অক্ষর পড়বে সে সর্বনিম্নে ১০টা নেকি পাবে। (হাদীস: তিরমিজি-২৯১)।

ফলে মৃত ব্যক্তির পাশে বসে যারা কোরআন তেলাওয়াত করবে তারাই নেকি পাবে। কিন্তু এতে মৃত ব্যক্তি কোনো সওয়াব পাবেন না।

রাসুলুল্লাহ (সা.) মুমূর্ষু ব্যক্তিকে শুধু ‘তালক্বীন’ করাতে বলেছেন। ‘তালক্বীন’ অর্থ কথা বুঝানো বা দ্রুত মুখস্থ করে নেওয়া।

মৃত্যুর আলামত দেখা গেলে রোগীর শিয়রে বসে তাকে কালেমায়ে ত্বাইয়িবা (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) স্মরণ করিয়ে দেয়া।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির সর্বশেষ বাক্য হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।’

কোরআন ও হাদীসে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সন্তানগণকে মৃত পিতা-মাতার জন্য দান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ, সিয়াম পালন, হজ্জ ও উমরা পালনের কথাও হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।

মৃত ব্যক্তির জন্য কোরআন তেলাওয়াত, কোরআন খতম, তাসবীহ তাহলীল পাঠ ইত্যাদি ইবাদতের কোনো নির্দেশনা হাদীসে বর্ণিত হয় নি।

রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআন তেলাওয়াত করে নিকট আত্মীয় বা অন্য কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য ঈসালে সওয়াব করেননি।

কোরআন তেলাওয়াতের সওয়াব যদি মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছাতো বা এর দ্বারা সে কোনোভাবে উপকৃত হতো, তাহলে অবশ্যই রাসুলুল্লাহ (সা.) তা করতেন, উম্মতকেও নির্দেশ দিতেন যেন তাদের মৃতরা উপকৃত হয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন মুমিনদের ওপর দয়ালু ও অনুগ্রহশীল। তার পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদীন ও সকল সাহাবায়ে কেরাম তার যথাযথ অনুসরণ করেছেন।

তারা কেউ কোরআন তেলাওয়াত বা কুরআন খতম করে ঈসালে সওয়াব করেননি।

সুতরাং রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তার সাহাবাদের আদর্শ অনুসরণ করাই আমাদের জন্য কল্যাণকর।

(সংগৃহীত ও সম্পাদিত)

আরও পড়ুন: 

অজু ছাড়া কি কোরআন স্পর্শ করা যাবে?

আজান দেওয়ার সময় মুয়াজ্জিন কানে হাত দেয় কেন? 

মহানবী (সা.) কখনো আজান দেননি কেন?

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর