রবিবার, ৫ মে, ২০২৪ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৫ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করুন, সরকারকে হুঁশিয়ারি ফখরুলের


রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, নোয়াখালী প্রকাশের সময় :১৪ জুলাই, ২০২৩ ৮:৩৬ : অপরাহ্ণ
নোয়াখালীতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আর কোনো সময় নেই, তাদের সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, আবারো বলছি, ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক-বালিকার মতো পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দেন। যদি ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করেন তাহলে তো ভালো। তা না হলে ফয়সালা হবে রাজপথে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষকদল, শ্রমিকদল, মৎস্যজীবীদল তাঁতীদল ও জাসাস এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে তাদের ভাত নাই। তারা ৩০টি আসনও পাবে না। তাই তারা নিজেদের সরকারের অধীনে আবারও পাতানো নির্বাচন দিতে চায়। দেশের জনগণের এবার তা হতে দিবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের সবগুলো হেডকোয়ার্টার দখল করে নেবো।’

আওয়ামী লীগের এক দফা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদেরও এক দফা শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। কী আবদার, কী আবদার! দেশের মানুষকে এতো বোকা ভাববেন না। তারা সজাগ হয়েছে। তারা এবার নিজের ভোট নিজে দিতে চায়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার বিদেশিদের কি বুঝাচ্ছে জানি না। আমরা বিদেশি-টিদেশি বুঝি না। একটাই বুঝি, দেশের জনগণ এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই তারা জেগে উঠেছে। কৃষক-শ্রমিক জোট বেঁধে আজ রাজপথে নেমেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতেই হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দিচ্ছি না। গত কয়েক বছর ধরে বিএনপি মিছিল, সভা-সমাবেশ করলেও হরতাল অবরোধ করেনি।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘শুক্রবারের জুমার খুতবা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। তারাই ঠিক করে দেয় মসজিদে কি খুতবা দেওয়া হবে। তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। মানুষ মুখফুটে কথা বলতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০০৮ সালে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সকলকে বোকা বানিয়ে তিনি বিচার ব্যবস্থা ও খায়রুল হকের ওপর দোষ চাপিয়ে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করলেন। কারণ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নাই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আট বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করেছেন। আমরা নির্বাচিত হলে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়ে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকার। মা তার ছেলে খোঁজে, শিশু তার বাবাকে খোঁজে। ছোট্ট বাচ্চা সাফা তার বাবার হাত ধরে ঈদে যেতে চায়। আমাদের অসংখ্য নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড়লাখ মামলা দিয়েছে যার বেশিরভাগই গায়বী। সময় এলে এর বিচার হবে।’

সমাবেশে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, মো. শাহজাহান, পদযাত্রার সমন্বয়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু, লক্ষ্মীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ উদ্দিন নিজান প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে এক বিশাল পদযাত্রা নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম থেকে প্রধান সড়ক হয়ে বেগমগঞ্জের একলাশপুরে গিয়ে শেষ হয়।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর