বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৫ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা রাজনীতির মুখ

প্রশ্ন: বাবরের নাম শুনলে মানুষ কেন আতঙ্কিত হয়, উত্তর: মিডিয়া আমাকে ভিলেন বানিয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৩ মার্চ, ২০২২ ৬:০৭ : অপরাহ্ণ
হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর
Rajnitisangbad Facebook Page

হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। বয়স ৪৭ বছর। যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক।

চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে তার নামটি অতিপরিচিত।

চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা সময়ে আলোচনা ও সমালোচনায় উঠে আসেন নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক এই জিএস।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের সিআরবিতে জোড়া খুনের মামলার চার্জশিটে নাম আসার পর নগরবাসীর আলোচনায় এসেছেন বাবর।

গেলো মঙ্গলবার ( ১ মার্চ) বিকেলে নগরীর নন্দনকাননের বাসায় সিআরবিতে জোড়া খুনের ঘটনা ও নিজের রাজনৈতিক জীবনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনীতি সংবাদের সঙ্গে কথা বলেছেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

৯ বছর আগে ২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রামের সিআরবিতে রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ে বিরোধের জের ধরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে এক শিশু এবং যুবলীগের এক কর্মী নিহত হন।

এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আসামি করা হয় বাবরকে। ঘটনার পরদিন ২৫ জুন ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। আড়াই মাস জেল কাটার পর জামিনে মুক্তি পান।

কিন্তু এ জোড়া খুনের মামলার চার্জশিটে বাবরের নাম আসলেও ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পায়নি তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।

পিবিআই ঘটনার সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা না পেলেও আদালত চার্জ গঠন করেছেন। আপনি কি মনে করেন, বিচারে নির্দোষ প্রমাণ হবেন?

এ প্রশ্নের জবাবে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বলেন, ‘আমি আশাবাদী, বিচারের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণ হবো। কারণ এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা ছিল না।’

ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে আপনাকে মামলায় কেন আসামি করা হলো?

উত্তরে বাবর বলেন, ‘এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছিল। ভিকটিম নিহত সাজু পালিতের মা মিনতি পালিত বাদী হয়ে যে মামলা করেছেন সেখানে আমাকে আসামি করা হয়নি। কারণ নিহত সাজু পালিত আমার কর্মী ছিল। অথচ পুলিশের মামলায় আমাকে আসামি করা হয়। মূলত মামলায় প্রতিপক্ষের এক নেতাকে আসামি করা হয়েছিল বিধায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমাকে ৬৪ নম্বর আসামি বানানো হয়। অথচ সেদিন ঘটনার সময় আমি ছিলাম ঢাকায়।’

সেদিন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম লিমন গ্রুপের কর্মীদের সঙ্গে আপনার কর্মীদের সংঘর্ষ কেন হয়েছিল?

জবাবে বাবর বলেন, ‘সংঘর্ষ কেন হয়েছিল সেটা আমি কীভাবে জানবো। তখন তো আমি ঢাকায় ছিলাম। আর ঘটনার আগে লিমনকে তো আমি চিনতামই না। ঘটনার পর প্রথম আমি তার নাম শুনি।’

নগরীর রাজনৈতিক অঙ্গনে তো প্রচার আছে, সাইফুল ইসলাম লিমন আপনার প্রতিদ্বন্দ্বি…

এ প্রশ্ন শুনে বাবর হেসে বলেন, ‘সেটা কাগুজে!’

অভিযোগ আছে, সেদিন সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া একপক্ষের মধ্যে তো আপনার অনেক কর্মী ছিল…

জবাবে বাবর বলেন, ‘সেদিন সিআরবিতে সংঘর্ষের সময় আমার কোনো কর্মী ছিল না। সেদিন নন্দনকানন থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছিল। পিবিআইয়ের তদন্তে আমার ১৪ জন কর্মীর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’

তারমানে সেদিন রেলওয়ের সেই ১ কোটি ১০ লাখ টাকার টেন্ডার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়নি?

উত্তরে বাবর বলেন, ‘টেন্ডার হয়েছিল ই-জিপির মাধ্যমে। সেখানে এটা নিয়ে সংঘর্ষ কেন হবে?’

একটা কথা প্রচার আছে, আপনি শত কোটি টাকার মালিক। আসলে কি তাই?

এ প্রশ্নের উত্তরে বাবর বলেন, ‘যারা এ কথা বলছে তাদেরকে দুর্নীতি দমন কমিশনে এ তথ্য দিতে বলেন। দুদক আমার শত কোটি টাকার সন্ধান বের করুক।’

সিআরবিতে জোড়া খুনের ঘটনার পর যুবলীগ থেকে আপনাকে বহিস্কার করা হয়েছিল। এরপর আপনি তো রাজনীতির মাঠে তেমন সক্রিয় নেই। এর কারণ কী?

জবাবে বাবর বলেন, ‘যেহেতু একটা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাই সাংগঠনিক নিয়মে আমাকে বহিস্কার করা হয়। এখন আমি সাংগঠনিক কোনো পদে না থাকলেও মানুষের সেবা করছি। কারণ রাজনীতির উদ্দেশ্য হলো মানুষের সেবা করা। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় আছি। সমাজের অসহায় মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই।’

হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে তো আপনার ঘনিষ্ঠতা ছিল। মৃত্যুর আগে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে আপনার সর্বশেষ কী কথা হয়েছিল?

জবাবে বাবর বলেন, ‘‘নগরীর একটি বেসরকারী হসপিটালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর যেদিন মৃত্যু হয় তার ৫ ঘণ্টা আগে আমি তাকে দেখতে যাই। তিনি অনেক কষ্ট করে কথা বলছিলেন। তার কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাকে বলেন, ‘ভালো হয়ে চলিস। মানুষের সেবা করিস।’’

১ বছর আগে আপনার অভিনব করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপন করার উদ্যোগ দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। এরপর থেকে বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে আপনাকে সরব দেখা যাচ্ছে। হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর কি ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হচ্ছেন?

এ প্রশ্নের উত্তরে বাবর বলেন, ‘এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে আমার ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য নেই। দলীয় কোনো পদ-পদবী কিংবা ক্ষমতার জন্য আমি এসব কাজ করছি না। আমি মানবতার ফেরিওয়ালা হতে চাই। আমি যা রোজগার করি তা মানুষকে বিলিয়ে দিই। জীবনে আর কতদিনই বা বাঁচবো।’

দলীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে না থেকেও চট্টগ্রামের মানুষের কাছে আপনি একনামে পরিচিত। কিন্তু বাবরের নাম শুনলে মানুষ কেন আতঙ্কিত হয়?

এ প্রশ্নের জবাবে বাবর বলেন, ‘আসলে আমি মিডিয়া ট্রায়ালের (গণমাধ্যমীয় বিচার) শিকার। মিডিয়ায় আমাকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। এই যে, সিআরবিতে জোড়া খুনের ঘটনায় মিডিয়ায় আমাকে দোষী বানানো হয়েছে। অথচ পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে এ ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এভাবে মিডিয়া অপপ্রচার করে সাধারণ মানুষের কাছে আমাকে ভিলেন বানিয়েছে।’

আরও পড়ুন:

তিনটি গুপ্তহত্যার চেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন জেলেনস্কি

পারমাণবিক বোমারোধী বিমান উড়ালো যুক্তরাষ্ট্র!

মহিউদ্দিন চৌধুরীর ‘দুটি প্রস্তাব’ ফিরিয়ে দেন ফরিদ মাহমুদ

আজিজের বর্ণাঢ্য মিছিল সবার নজর কাড়ে!

নন্দিত রনি, নিন্দিত রনি!

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর