বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত গণঅনশন কর্মসূচি থেকে বিএনপি মহাসচিব এমন দাবি জানিয়ে সরকারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দিলে গণঅনশনের মধ্য দিয়ে আজকে সরকার পতন আন্দোলন শুরু হলো।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আজকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি বিদেশী ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছেন বাংলাদেশে যা চিকিৎসা দেয়া সম্ভব এখানে তারা তা দিচ্ছেন, দিয়েছেন। তার কিছু জটিলতা আছে বিদেশে আরো অ্যাডভান্স সেন্টার ট্রিটমেন্ট না হলে তাকে সুস্থ করা যাবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম জিয়ার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য। তারা সে সুযোগ দেয়নি। ফিরিয়ে দিয়েছে। উপরন্তু পার্লামেন্টে সংসদ নেত্রী এমন ভাষায় কথা বলেছেন, যে ভাষা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
সংসদে আইনমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৪০১ ধারায় সরকারের সম্পূর্ণ অধিকার আছে। এবং এটা তাদের দায়িত্ব। নির্দেশ দিয়ে বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশের মাটির সাথে অবিচ্ছেদ্য। আমাদের মা এবং মাটি বলতে খালেদা জিয়াকে বুঝি। এ নেত্রীকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করতে হবে। তার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত আছি।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন দুই হাত তুলে শপথ গ্রহণ করি, দেশনেত্রীকে তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।’
প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আযম খান, শামসুজ্জামান দুদু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের আহ্বায়ক হাসান জাফির তুহিন সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুল হক খোকন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
বিএনপির এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার চৌধুরী বুলবুল প্রমুখ।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেওয়ার দাবিতে আগামী ২২ নভেম্বর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে দলটি।
শনিবার দিনব্যাপী গণঅনশন শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন:
বিএনপি চাইলে বিদেশ থেকে খালেদা জিয়ার জন্য বড় ডাক্তার আনতে পারে: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, আর কতো চান: প্রধানমন্ত্রী