শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৮ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা জাতীয়

প্রশ্ন ভারতীয় কূটনীতিকের

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক কি চীন-পাকিস্তানের মতো হচ্ছে?


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:০৩ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে মুখ খুললেন ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী।
Rajnitisangbad Facebook Page

পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার। এক সময় দেশটির প্রভাবশালী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিব (অর্থনৈতিক সম্পর্ক) হিসেবেও কাজ করেছিলেন। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে কার্যত গা ঢাকা দিতে হয়েছিল’ চলতি মাসের শুরুতে এমন দাবি করে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছিলেন।

আবার নতুন করে আলোচনায় পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। এবার তিনি সরব হয়েছেন বাংলাদেশে চীনা প্রভাব বৃদ্ধি এবং এর ফলে ভারতের জন্য সম্ভাব্য সকল হুমকি নিয়ে মুখ খুলে।

এসব বিষয়ে পিনাক রঞ্জন বেশ খোলামেলা কথা বলেছেন, যা আজ সোমবার ভারতের শীর্ষস্থানীয় টিভি নিউজ চ্যানেল এবিপি’র লাইভে প্রকাশিত হয়েছে।

জুলাই মাসের শুরুতে সম্ভাব্য ভারত সফরে দেশটির নতুন সরকারের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক প্রসঙ্গে পিনাক রঞ্জন বলেন, ‘এক দেশের নেতার অন্য দেশে সফরে যাওয়া নিয়ে এর আগে ভারতের কোনো সমস্যা ছিল না। চীন যে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী সে বিষয়টি আমরা ভালোভাবেই অবগত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সম্পর্ক কতটা বিকশিত হবে? সম্পর্কটা কি চীন ও পাকিস্তানের মতো হতে যাচ্ছে? আমরা জানি না। হয়ত তেমনটা হবে না। কিন্তু, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

ভারতীয় এই কূটনীতিক বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্য আনতে চায়। এক হাত ভারতে, অন্য হাত চীনে রাখতে চায়। প্রতিরক্ষার দিক থেকে দেখলে তাদের অস্ত্রশস্ত্রের প্রায় ৭০ শতাংশই চীনা উদ্ভূত। এভাবেই চীনারা দেশটিতে প্রবেশ করেছে। যদিও বেইজিং ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দেয়নি।’

পিনাক রঞ্জন প্রশ্ন রাখেন, ‘‘সাবমেরিন ঘাঁটিতে (চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায়) যদি চীনারা ‘পোর্ট কল’ করে বসে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী করবেন? তার ফলে চীনা সাবমেরিনগুলো বিপজ্জনকভাবে আমাদের জলসীমার কাছাকাছি চলে আসবে।’’

ভারত, বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে আসল সমস্যার জায়গা হলো তিস্তা প্রকল্প-এমন মন্তব্য করে ভারতীয় এই কূটনীতিক বলেন, ‘যদি চীন তিস্তা প্রকল্পে জড়িত হয়ে পড়ে তবে আমাদের জন্য বাস্তবেই সেটা সমস্যা হবে কারণ তাতে চীনা শ্রমিকরা স্পর্শকাতর (ভারতের) শিলিগুড়ি করিডরের কাছাকাছি চলে আসবে। তারা সেখানে ডিভাইস লাগানো থেকে শুরু করে ভারতের কৌশলগত দিকে নজর রাখা পর্যন্ত সকল ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারবে।’

এদিকে এবিপি লাইভ জানায়, শেখ হাসিনার জুলাই মাসের শুরুতে ভারত সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আবার, ওই মাসেই তিনি চীন সফর করবেন।

সম্ভবত, নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য ভারত সফরে যাওয়া প্রথম বিশ্বনেতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শেখ হাসিনার। ওই সফরে তিনি বাংলাদেশের কৌশলগত ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চীনা পদচিহ্ন নিয়েও আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ, চীনের সহায়তায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’ চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় গত বছর কমিশন হওয়ার পর থেকে নয়াদিল্লির ‘উদ্বেগ বেড়েছে’।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর