মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, ‘দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।’
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এমদাদুল হক আজাদের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ করে এ মন্তব্য করেন।
আজ মঙ্গলবার আদিলুর-এলানের পক্ষে জামিন শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভুঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম।
জামিন শুনানি করতে শুরুতে ডায়াসের সামনে দাঁড়ান সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল করিম দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমাদেরও বক্তব্য আছে। তখন হাইকোর্ট বলেন, আসামিদের আইনজীবীকে আগে বলতে দিন। আপনি এখনই লাফ দিয়ে উঠছেন কেন? দেশটাকে তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।’
এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় আসামিদের দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে গুজব, তথ্য বিকৃতির অভিযোগে সাজা হয়েছে।’
তখন আদালত বলেন, ‘তাহলে তাদের ২ বছরের সাজা দিলেন কেন? যাবজ্জীবন দণ্ড দিতে পারলেন না। দেশটা তো জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছেন।’
শুনানি শেষে আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করা হয়।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার মামলায় আদিলুর-এলানকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সাজাপ্রাপ্তরা সশ্রম কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান তারা।
১০ বছর আগে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৬১ জন নিহত হওয়ার কথা দাবি করেছিল অধিকার।
তবে সরকারের ভাষ্য, সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ওই বছরের ১০ জুন জিডি করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে সেটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে জামিন পেলেন অধিকারের আদিলুর-এলান