বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। বোলারদের নৈপুণ্যে উড়িয়ে দেয় আফগানিস্তানকে। আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় ম্যাচে ইংলিশ পরীক্ষায় নেমেছিল টাইগাররা। তবে সেই পরীক্ষায় পাত্তাই পেলো না বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের কাছে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
ধর্মশালায় বাংলাদেশী বোলারদের রীতিমতো কচুকাটা করা মালানের শতকে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান তোলে ইংল্যান্ড। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২২৭ রানের গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
৩৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৪ রানে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২ বলে ১ রান করে তানজিদ হাসান তামিম ও রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হাসান শান্ত।
এরপর ক্রিজে আসা সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস। তবে দলীয় ২৬ রানে ফের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৯ বলে ১ রান করে ফিরে যান সাকিব।
এই তিন ব্যাটারকেই সাজঘরে ফেরান রেস টপলি। এরপর ক্রিজেই সাজঘরে ফিরে যান মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ৪৯ রানে ৭ বলে ৮ রান করেন তিনি।
মিরাজের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মুশফিক। একপ্রান্তে উইকেট হারালেও অন্যপ্রান্তে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন লিটন।
মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন লিটন। তবে ১২১ রানে ৬৬ বলে ৭৬ রান করে আউট হন লিটন।
তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাওহিদ হৃদয়।
হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন মুশফিক। এরই মাঝে অর্ধশতক পূর্ণ করেন মুশফিক। তবে দলীয় ১৬৪ রানে ৬৪ বলে ৫১ রান করে আউট হন তিনি। মুশফিকের বিদায়ের পর দলীয় ১৮৯ রানে ৬১ বলে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান হৃদয়।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৪৮ ওভার ২ বলে ২২৭ রান অলআউট হয় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের পক্ষে টপলি ৪টি ও ক্রিস ওকস নেন ২টি উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকে চড়াও হন দুই ওপেনার বেয়ারস্টো ও মালান। দুজন মিলে ওপেনিং জুটিতে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ১১৫ রান।
তাদের মধ্যকার ১১৫ রানের জুটি ইংল্যান্ডকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। ১৭.৫ ওভারে বেয়ারস্টোকে ৫২ রানে আউট করে জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান।
বেয়ারস্টো ফিরলেও রুটকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মালান। মালান-রুট মিলে করেন ১৫১ রানের জুটি।
৩৮ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ইনসুইং ডেলিভারিতে তাকে পরাস্ত করেন শেখ মেহেদি হাসান। ১০৭ বলে ১৬ চার ও পাঁচ ছক্কায় ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন মালান।
এরপর উইকেটে এসেই আক্রমণাত্মক শুরু করেছিলেন জস বাটলার। ১০ বলে ২০ রান করে ঝড়ের আভাস দেওয়া ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম।
বাটলার আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ড হারায় সেট ব্যাটার রুটকে। সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়া রুটকেও থামান শরিফুল। উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে ৬৮ বলে ৮২ রান করা রুটকে সাজঘরের পথ দেখান শরিফুল।
এরপর এক ওভারেই শরীফুলের জোড়া উইকেট। শিকার জো রুট ও লিয়াম লিভিংস্টোন।
এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই হ্যারি ব্রুককে ফেরান মাহেদী। তারপর মাহেদীর শিকার হন স্যাম কুরান ও আদিল রশিদ। পরে শেষ ওভারে ক্রিস ওকসকে আউট করেন তাসকিন।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান তুলে ইংল্যান্ড। মাহেদীর চার উইকেট ছাড়াও শরীফুলের ৩টি আর সাকিব ও তাসকিন নেন একটি করে উইকেট।
বাংলাদেশের পক্ষে ৭১ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন অভিষিক্ত শেখ মেহেদি। তিন উইকেট নিতে শরিফুল দেন ৭৫ রান। একটি করে নেন সাকিব ও তাসকিন আহমেদ।