সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, আপনাদের আর রক্ষা নেই। এখনো সময় আছে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেন। অন্যথায় কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। জনগণ আপনাদের ছাড়বে না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কালাকচুয়া এলাকায় বিএনপির রোডমার্চ পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে খালি হাতে ফিরে এসেছেন’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার আমেরিকা-লন্ডনে ঘুরেও কোনো ফলাফল না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে এসেছে। এই সরকার আবারও ক্ষমতায় আসতে চাইছে। এবার আর এসবে কাজ হবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এ ভোটচোরদের আর দেখতে চায় না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তারা আমাদের ভয় দেখায়। হুমকি-ধমকি দেয়। কিন্তু কোনো কাজ হবে না। এখন একদফা এক দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করায় আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে খুন ও গুম করেছে। আমাদের ৪৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা ১৫ বছর ধরে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। শেখ হাসিনার সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এ দেশ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সরকার এ দেশে নিউক্লিয়ার (পারমাণবিক) নিয়ে এসেছে। কিন্তু জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি। এসব নিউক্লিয়ার আনার আগে আশপাশের জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়। কিন্তু তাদের সেদিকে খেয়াল নেই। তারা বড় বড় প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করার জন্যই এ ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশের সব সেক্টর থেকে দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে। আমরা যেন এসব বিষয়ে কথা বলতে না পারি সে জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন পাশ করেছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের দেহটা আছে, কিন্তু প্রাণ নেই। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এরা এখন পাগল হয়ে গেছে। এদের হাতে আর সময় নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই বিদায় নিতে হবে। পতন সামনে দেখে পাগলের মতো আবোলতাবোল বলছে। ভোট চোর এ সরকারের কোনো রক্ষা নেই।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে গিয়ে অনেকের পায়ে ধরেছে। টিকে থাকার জন্য ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক তাকে আর পাত্তা দেয়নি। আমরা ‘৭১ সালে একবার মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এবার ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আরেকবার মুক্তিযুদ্ধ করব। অবৈধ ভোট চোর হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত করবো।’
সমাবেশের পর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে হাজারো নেতা-কর্মীর বহর নিয়ে বিএনপির রোডমার্চ শুরু হয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী নিয়ে চট্টগ্রাম অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চ
