শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১০ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা রাজধানী

মেট্রোরেলে যেভাবে ভ্রমণ করবেন


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ৯:১৯ : পূর্বাহ্ণ
ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। আজ বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে চালু হচ্ছে এই ট্রেন। শুরুতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে।

রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেনগুলো মাঝপথে কোথাও থামবে না। তবে আগামী ২৬ মার্চ থেকে এই পথের নয়টি স্টেশনের সবগুলোতে মেট্রোরেল থামবে।

মেট্রোরেল কী
সাধারণ রেলপথে পাথর থাকে। কিন্তু মেট্রোরেলের লাইনে কোনো পাথর নেই। সাধারণ রেললাইনে কিছুটা পরপর জোড়া আছে। কিন্তু মেট্রোরেলের লাইনে কোনো জোড়া নেই। আসা-যাওয়ার দুটি ভিন্ন লাইন। শুধু স্টেশনে একাধিক লাইন আছে। মেট্রোরেল চলাচল করবে পুরোপুরি বিদ্যুতের মাধ্যমে। এ জন্য রেললাইনের দুই পাশে খুঁটি দিয়ে ওপরে তার টানানো হয়েছে। মেট্রোরেলের সঙ্গে ওপরের তারের সংযোগ আছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, মেট্রোরেলের চলাচল, স্টেশনে থামা, কোথায় কত গতিতে চলবে—এর পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে, একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এই ব্যবস্থা উত্তরার দিয়াবাড়ির ডিপোতে থাকা অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টারে (ওসিসি) থাকবে। যাত্রীদের যাতায়াত সম্পর্কে দিকনির্দেশনা পরে ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকব।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটি জানিয়েছে, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথে যেখানে লাইন সোজা, সেখানে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে মেট্রোরেল চলবে। আর যেখানে কিছুটা বাঁক রয়েছে, সেখানে কিছুটা কম গতিতে চলব। পুরো ব্যবস্থা আগে থেকেই ঠিক করা আছে।

টিকিট কাটার পদ্ধতি
মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনই তিন তলা। প্রথম তলা পেরিয়ে দ্বিতীয় তলায় রয়েছে কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষ, টিকিট কাউন্টার এবং ওয়েটিং রুম। এটাকে বলা হয় ‘কনকর্স লেভেল’। এখান থেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে হবে।

দ্বিতীয় তলা থেকে টিকিট সংগ্রহ শেষ করে সিঁড়ি বা লিফটের মাধ্যমে পৌঁছাতে হবে তৃতীয় তলায়। টিকিট চেকইনের বিষয়টি দ্বিতীয় তলাতেই শেষ করা হবে। টিকিট চেক হবে ডিজিটালি। সেখানে কোনো কর্মীর প্রয়োজন হয় না। যদি কেউ না পারেন তাহলে নিরাপত্তা কর্মীরা যাত্রীদের সহযোগিতা করবেন।

যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে তিন ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে প্রতিটি স্টেশনে। সিঁড়ি, এস্কেলেটরের পাশাপাশি বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য রাখা হয়েছে লিফট।

গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটার দু’টি পদ্ধতি রয়েছে সিঙ্গেল বা একক ও পারমানেন্ট। টিকিট সংগ্রেহর আগে যাত্রীকে প্রথমে মনিটরে ভাষা নির্বাচন করতে হবে।

ইংরেজি ও বাংলা দু’টি ভাষা রয়েছে, যে ভাষায় আপনি স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করবেন সেটা নির্বাচনের পর একক বা পারমানেন্ট (এমআরটি পাস) নির্বাচন করতে হবে। এরপর আসবে গন্তব্যের তালিকা। কোন স্টেশন পর্যন্ত কত ভাড়া সে তালিকা থাকবে। সেখান থেকে যাত্রীকে গন্তব্য স্টেশন নির্বাচন করতে হবে।

এরপর কয়টি টিকিট সংগ্রহ করবেন সে তালিকা আসবে। এরপর প্রয়োজনীয় টিকিট, গন্তব্য স্টেশন নির্বাচন করে “ওকে” বাটকে টাচ করলেই মেশিন টাকা দিতে বলবে। টাকা দেওয়ার পর টিকিট বা এমআরটি পাস বেরিয়ে আসবে। এই পদ্ধতি অনুসরন করে মেট্রোরেলের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। একজন যাত্রী একবারে ৫টির বেশি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না।

অন্যদিকে, এমআরটি পাস পদ্ধতিতে একটি স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে যতবার খুশি যাতায়াত করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে কার্ডটি সময়মতো রিচার্জ করে রাখতে হবে। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করে নিতে পারবেন। প্রত্যেক মেট্রো স্টেশনে থাকা টিকিট ভেন্ডরের মেশিনের মাধ্যমেই রিচার্জ করা যাবে। টিকিট সংগ্রহ করে যেতে হবে তৃতীয় তলায়।

তৃতীয় তলাতেই মেট্রোর মূল প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট সময় পর পর ট্রেন এসে থামবে। অটোমেটিক দরজা খুলে যাবে। যাত্রীরা নামবেন, আপনি উঠবেন। গন্তব্য স্টেশনে ট্রেন থামলে যাত্রীরা এমআরটি পাস পাঞ্চ করলেই দরজা খুলে যাবে এরপর বেরিয়ে যেতে পারবেন। সিঙ্গেল এন্ট্রির কার্ডে ভ্রমণের মেয়াদ একবার। আর দশ বছর মেয়াদি কার্ডের যাত্রীরা বার বার ভ্রমণ করতে পারবেন। ভ্রমণের দূরত্বে ভাড়া অনুযায়ী অটোমেটিক টাকা কেটে নেবে।

ভাড়া
মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধের জন্য ১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড থাকবে। এই কার্ড কিনতে লাগবে ২০০ টাকা। এরপর প্রয়োজনমতো টাকা দিয়ে (রিচার্জ) কার্ড ব্যবহার করা যাবে। এই কার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে। বৃহস্পতিবারই ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের লিংক দেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) জন্য নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না। স্টেশন থেকে এক যাত্রার এবং দীর্ঘমেয়াদি—দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে।

মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬-এ প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ৫ টাকা, সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা এবং উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ভাড়া ১০০ টাকা। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া মওকুফ। মাসিক, সাপ্তাহিক, পারিবারিক ভাড়ার কার্ডে ভাড়ায় বিশেষ সুবিধা থাকবে।

শুরুতে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে টিকিট (কার্ড) কাটা যাবে। স্টেশন পড়বে মোট ৯টি। এই পথের মোট ভাড়া ৬০ টাকা।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর