চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের লাশ কেউ দেখেনি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমিতো চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার মানুষ, রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নে নাকি জিয়াউর রহমানকে প্রথম কবর দেয়া হয়েছিল। সেদিনকার প্রত্যক্ষদর্শী বর্তমানে সেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন, তিনি আমাকে জানিয়েছেন আমরা জিয়াকে দেখি নাই।’
সেসময়ের আরও অনেকেই জীবিত আছেন উল্লেখ করে রাঙ্গুনিয়া আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘তথাকথিত প্রথম কবরেও আসলে জিয়াউর রহমানের লাশটা কেউ দেখে নাই। একটা বাক্স দেখেছিল। এমনকি খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, বিচারপতি সাত্তারও দেখেনি। জ্বিন কিংবা ভুতে দেখেছে কিনা আমি জানি না।’
আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে পনের ও একুশে আগস্টে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ এ সভার আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর নেই।’
আরো পড়তে পারেন: চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ নেই, বিএনপি এতো নাটক করে কেন: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একটি সত্য কথা বলেছেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে আসলে জিয়াউর রহমানের কোন লাশ নাই। সেটি যখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, তখন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটা বক্তব্য দিয়েছেন। অবশ্য সেটা না দিলে তার মহাসচিব পদ থাকে কিনা সেটাও একটা ব্যাপার।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেতারা ক্রমাগতভাবে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে অস্বীকার করে আসছেন। তারা একজন খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা চালান। ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জিয়াউর রহমানের তথাকথিত কবরে যান তারা, কোন সময় কারো বিয়ে ও কর্ণছেদন অনুষ্ঠান উপলক্ষেও তারা জিয়াউর রহমানের কবরে যান সেটাই এখন চিন্তার বিষয়। সেখানে গিয়ে আবার তারা মারামারি করেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অনেক অপচেষ্টা হয়েছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে ইতিহাসের পাতা থেকে তাঁকে নির্বাসিত করার চেষ্টা হয়েছিল। রেডিও টেলিভিশন রাষ্ট্রীয় প্রচার যন্ত্র থেকে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার খলনায়ক পাকিস্তানিদের দোসর জিয়াউর রহমানকে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল।’
বিএনপিকে অসত্য এবং মিথ্যাচারের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং অসত্যের ওপর বিএনপির রাজনীতি দাঁড়িয়ে আছে। মিথ্যা আর অসত্যের ওপর রাজনীতি করে বেশিদিন ঠিকে থাকা যায় না, এটিই হচ্ছে ইতিহাসের শিক্ষা। তাহলে হয়তো বিএনপির আজকের যে অবস্থা সেটা থেকে তারা মুক্তি পেতে পারে।’
উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, দেবাশীষ পালিত, শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইদ্রিছ আজগর, গিয়াস উদ্দিন, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খাঁন, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
