বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৪ শাওয়াল, ১৪৪৫

মেসি কত টাকার মালিক, সেই অর্থ খরচ করেন কীভাবে


প্রকাশের সময় :২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ৫:৪৬ : অপরাহ্ণ
লিওনেল মেসি
Rajnitisangbad Facebook Page

স্বপ্নের মতো সময় কাটছে মেসি ও আর্জেন্টিনা দলের। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ খরা কাটায় আলবিসেলেস্তেরা।

আর্জেন্টিনাকে অনেকটা একাই বিশ্বকাপ ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গেছেন দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। মাঠে খেলায় এবং মাঠের বাইরে আয়, দুই ক্ষেত্রেই সমানভাবে দক্ষ মেসি।

ধনকুবেরদের পকেটের খবর রাখা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ফোর্বস জানিয়েছে, চলতি বছর ১৩০ মিলিয়ন ডলার (১৩ কোটি ৩৪ লাখের বেশি) আয় করেছেন মেসি। বর্তমানে তিনিই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জনকারী অ্যাথলেট।

নিজের বর্তমান ক্লাব প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন থেকেই বছরে সাড়ে তিন কোটি ডলার আয় করেন মেসি।

সে হিসাবে প্রতি সপ্তাহে ৭ লাখ ৩৮ হাজার বা প্রতিদিন ১ লাখ ৫ হাজার বা ঘণ্টায় ৮ হাজার ৭৯০ টাকায় আয় করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

গত গ্রীষ্মে পিএসজিতে যোগ দেয়ার সময় আড়াই কোটি ডলার জয়েনিং ফি নিয়েছিলেন মেসি।

কিন্তু মাঠের বাইরেও মেসি প্রচুর টাকা আয় করেন। মাঠের বাইরে থেকে গত বছর সাড়ে ৫ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছেন মেসি।

এছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘ফ্যান টোকেন’ প্লাটফর্ম সোসিওস থেকে এক বছরের জন্য ২ কোটি ডলারের ‍চুক্তি করেছেন ৩৫ বছর বয়সী এই তারকা খেলোয়াড়।

তার পোর্টফোলিওতে অ্যাডিডাস, বুডউইসের ও পেপসিকো’র মতো কোম্পানিও রয়েছে।

মেসি কত টাকার মালিক, সেই অর্থ খরচ করেন কীভাবে

গত জুনে তিনি হার্ড রক ইন্টারন্যাশনালের প্রথম শুভেচ্ছাদূত হন। সেলিব্রেটি নেট ওর্থ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, মেসির মোট সম্পদের পরিমাণ ৬০ কোটি ডলার। এ পর্যন্ত ১০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছেন মেসি।

ফোর্বস বলছে, মাঠে ও মাঠের বাইরে মিলিয়ে ক্যারিয়ারে ১০০ কোটি ১৫ লাখ ডলার আয় করেছেন মেসি।

এর চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ আয়কারী সক্রিয় অ্যাথলেট রয়েছেন মাত্র তিনজন। তারা হচ্ছেন- লেব্রন জেমস, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো ও টাইগার উডস।

মেসিসহ এই চারজন ছাড়া আর মাত্র দুজন তাদের ক্যারিয়ারে ১০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছেন বলে জানিয়েছে ফোর্বস। তারা হচ্ছেন- রজার ফেদেরার ও ফ্লয়েড মেওয়েদার।

নিজের আয় করা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিলাসবহুল গাড়ির পেছনে খরচ করতে ভালোবাসেন মেসি।

গোল ডটকম জানিয়েছে, মেসির সংগ্রহে রয়েছে ২০ লাখ ডলারের পাগানি জোন্ডা ট্রাইকালার, একটি ফেরারি এফ ৪৩০ স্পাইডার, একটি ডজ চার্জার এসআরটিএইট ও মাসেরাটি গ্রান টুরিসমো। এছাড়া পরিবেশ-বান্ধব বাড়ি এবং বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও রয়েছে মেসির।

আরও পড়ুন: গোল্ডেন বল জিতলেন মেসি

দ্য রিয়েল ডিল জানিয়েছে, আর্জেন্টিনার রোজারিও’তে ‘পরিবেশ-বান্ধব’ বাড়ি রয়েছে মেসির। ২০২১ সালে ফ্লোরিডার সেইন্ট আইল বিচে একটি বিলাসবহুল কন্ডোমিনিয়াম কিনতে ৭৩ লাখ ডলার খরচ করেছেন। এছাড়া হোটেল ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন মেসি।

২০১৭ সাল থেকে মেসি হোটেল চেইন এমআইএম হোটেলের মালিক। এই চেইনকে পরিচালনা করে ম্যাজেস্টিক হোটেল গ্রুপ। ইবিজা, মাজোরকা ও বার্সেলোনায় এই গ্রুপের রিসোর্ট রয়েছে। ২০২১ সালে এই চেইন আরান উপত্যকায় তাদের প্রথম শীতকালীন রিসোর্ট চালু করে।

ফোর্বস জানিয়েছে, চার তারকার এই হোটেলে একটি স্পা, একটি ইনডোর সুইমিং পুল, একটি ফিটনেস সেন্টার ও মাউন্টেইন গাইড সার্ভিসেসসহ ১৪১টি রুম রয়েছে।

২০১৭ সালে সাড়ে ৩ কোটি ডলার দিয়ে হোটেলটি কিনেছিলেন মেসি। প্রায় একই সময়ে ওই ভবনটি গুড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়, কারণ সেটির ব্যালকনি খুব বড় ছিল। তাই গুড়িয়ে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

গোল দিয়ে যেভাবে ডানা মেলে দৌড় দেন, ঠিক সেভাবেই বিশ্ব ঘুরে বেড়াতে নিজের ব্যক্তিগত বিমানে চড়ে বসেন মেসি। বিশ্বে ঘুরে বেড়ানোর জন্য দেড় কোটি ডলারের ব্যক্তিগত বিমান রয়েছে এই আর্জেন্টাইনের।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, মেসির 2004 গালফস্ট্রিম ভি ব্যক্তিগত বিমানে দুটি কিচেন ও বাথরুম রয়েছে। ওই বিমানে একসঙ্গে ১৬ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারেন। বিমানটির নম্বর ‘১০’।

এই জেটের লেজে স্ত্রী আন্তোনেল্লার নাম লেখা রয়েছে। আর বিমানের সিঁড়িতে মেসির সন্তানদের নাম লেখা রয়েছে।

মেসি কত টাকার মালিক, সেই অর্থ খরচ করেন কীভাবে

ইবিজাতে ছুটি কাটাতে ভালোবাসেন মেসি। এ বছর নিজের ৩৫তম জন্মদিন ইবিজার একটি সমুদ্রসৈকত হোটেল উশুইয়াতে পরিবারের সঙ্গে উদ্‌যাপন করেন তিনি।

ওই অনুষ্ঠানে বার্সেলোনায় তার সাবেক টিমমেট সেসে ফারেগাস ও লুইস সুয়ারেজ তাদের স্ত্রীদের নিয়ে যোগ দেন। এছাড়া আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতেও অবকাশ যাপনে বেশ স্বাছন্দ্য বোধ করেন মেসি।

আরও পড়ুন: ভক্তদের যে সুখবর দিলেন মেসি

২০০৭ সালে ইউনিসেফের সঙ্গে মিলে লিওনেল মেসি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন আর্জেন্টাইন কাপ্তান। এই ফাউন্ডেশন বিশ্বজুড়ে ঝুঁকির মুখে থাকা শিশুদের সহায়তা করে থাকে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, ২০১৭ সালে মেসির টাকায় সিরিয়ায় যুদ্ধে এতিম হওয়া ১৬০০ শিশুর জন্য ক্লাসরুম গড়ে তোলা হয়। আর ২০১৯ সালে কেনিয়ার নাগরিকদের খাবার ও পানি সরবরাহের জন্য ২ লাখ ১৮ হাজার ডলার দান করে এই লিওনেল মেসি ফাউন্ডেশন বলে জানায় গোল ডটকম।

মেসি কত টাকার মালিক, সেই অর্থ খরচ করেন কীভাবে

ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে মেসির এক বিবৃতিতে বলা হয়, যখন আমি একটি শিশুর মুখে হাসি দেখতে পাই, যখন সে ভাবে আশা রয়েছে, যখন তারা খুশি হয়, এটা আমাকে প্রতিদিন রোমাঞ্চিত করে। এ কারণেই আমরা লিও মেসি ফাউন্ডেশন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে যে শক্তি ও উৎসর্গ থাকতে হয়, সেই একই শক্তি ও উৎসর্গ নিয়ে শিশুদেরও খুশি করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবো।

আরও পড়ুন: ৩৬ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, মেসির হাতেই স্বপ্নের শিরোপা

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর