শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ রবিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা আওয়ামী লীগ

ফোনালাপ ফাঁস

আমি দেশের কাছাকাছি আছি, যাতে চট করে ঢুকে যেতে পারি: শেখ হাসিনা


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ৯:২৪ : অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনা
Rajnitisangbad Facebook Page

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তানভীর কায়সার নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে এই ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি।যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।’

আজ বৃহস্পতিবার ওই ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ফোনালাপে শেখ হাসিনা ও তানভীরের মধ্যে যে কথা হয়েছে-

তানভীর : আপা বাংলাদেশে একটা নিউজ আসছে, আপনাকে গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লিতে ট্রান্সফার করছে হেলিকপ্টারে করে।

হাসিনা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, হেলিকপ্টার দিয়ে? বলেন, কোন দেশের হেলিকপ্টার। ছবি পাঠাইও দেখবোনে। কি একটা আজগুবি কথা বলে ওরা। আমি দেশের খুব কাছাকাছি আছি। অত দূরে নাই। আমি খুব কাছাকাছিই আছি, যাতে আমি চট করে ঢুকে পড়তে পারি।

 

তানভীর: আপা (শেখ হাসিনা) আপনার কাছে ফোন দিয়েছি একটা ব্যাপারে, নিউইয়র্ক মহানগরে আমরা এমদাদ ভাইয়ের নেতৃত্বে মিটিং-মিছিল করছি। কিন্তু এলাকার পরিস্থিতি খুব খারাপ। কামরাঙ্গীর চর-কেরানীগঞ্জের সকল নেতাকর্মী এলাকার বাইরে।

এরপর শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, সব মার্ডার কেস। সবার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস।

তানভীর: এলাকার ছাত্রলীগ-যুবলীগকে আমি সহায়তা করছি। আপনি যদি বলেন, তুমি এখানে (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে ওদের হেল্প করো, করলাম। আর যদি বলেন, তুমি দেশে গিয়ে দল গোছানোর চেষ্টা করো তাহলে করবো আপা। আপনার সিদ্ধান্ত আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, এখানে (যুক্তরাষ্ট্র) বসে এখন সাহায্য করো। এটাই সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে। দেশে পরে গেলেও হবে।

তানভীর: আইনজীবীরা দাঁড়াতে পারছে না। এই বিষয়ে যদি আপনি পরামর্শ দিতেন…

শেখ হাসিনা বলেন, আইনজীবীদের বলো লোকজনকে অরগানাইজ করে যেন আইনজীবীরা সেখানে যায়। তাছাড়া তো আর কোনো…

এরপরে শেখ হাসিনাকে আবার বলতে শোনা যায়, তুমি যেখানে আছো সেখানে তো ইলেকশন চলছে। তাদের ক্যাম্পেইনিংয়ের সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, ক্যাম্পেইনিংয়ে সহযোগিতা করার সাথে সাথে এই বিষয়গুলো জানিয়ে রাখা। এদের কাছ থেকে একটা সাপোর্ট নিয়ে আসা।

তানভীর: আমার মনে হয়, এবার ট্রাম্প আসবে। ট্রাম্প আসলে আমাদের জন্য খুবই ভালো আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, সে যেই আসুক। তাদের ক্যাম্পেইনিংয়ে থাকলে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। এটা আমি সবাইকে বলেও দিয়েছি।

তানভীর:  আপা কষ্ট লাগে, আপনি যে মিডিয়াদের দিয়ে আসছেন, এরা সত্য বলে না, এরা কাজ করে না আপা। কই যাবো আপা। আল্লাহ আপনারে বাঁচাই রাখুক। আমরা আছি আপা। আপনি যখন নির্দেশ দেবেন, তানভীর তুমি আমেরিকা থেকে দেশে চলে আসো, এসে কামরাঙ্গীর চর-কেরানীগঞ্জে দলীয় নেতৃত্ব গোছাও, আপনি বললে সাথে সাথে দৌঁড় দেবো আপা।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন গেলেই দেবে একখানা মামলা, শেষে কিছুই করতে পারবা না। আমার বিরুদ্ধে ১১৩টা মামলা। এইসব জিনিসগুলো নিয়ে জাতিসংঘ থেকে সবার কাছে বলা দরকার, ফলস মামলা দিচ্ছে। আমার পরিবারের কেউ বাকি নাই্। সবার নামে মামলা।

উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে এবার গাজিয়াবাদ থেকে সরিয়ে নিয়েছে ভারত। তাকে গভীর রাতে হেলিকপ্টারে দিল্লির কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে স্থানটি কোথায়, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হেলিকপ্টারে গাজিয়াবাদ থেকে দিল্লি স্থানান্তরের খবর আর শেখ হাসিনার সঙ্গে তানভীরের টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আগস্ট মাসের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে।

আরও পড়ুন: দক্ষিণাঞ্চলের ‌‘গডফাদার’ শেখ হেলালের অপকর্মের ফিরিস্তি

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর