বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

বিএসএফের গুলিতে আহত তরুণের মৃত্যু, স্বজনদের আহাজারি


বিএসএফের গুলিতে লিটন মিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে তার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয়রা। ইনসেটে লিটন। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, লালমনিরহাট প্রকাশের সময় :২৭ মার্চ, ২০২৪ ৯:৩৯ : অপরাহ্ণ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলা শহরের একটি হাসপাতালে বিএসএফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর খবর শুনে তার স্বজনেরা আহাজারি করছেন।

মারা যাওয়া তরুণের নাম লিটন মিয়া (১৯)। গত ২৬ মার্চ ভোরে দুর্গাপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিনি আহত হন। তিনি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দিঘলটারী গ্রামের মোকছেদ হোসেনের ছেলে।

আরও পড়ুন: বিএসএফের গুলিতে নওগাঁয় নিহত ১, লালমনিরহাটে আরেকজন গুলিবিদ্ধ

লিটন মিয়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন। তিনি পাওয়ার টিলার চালাতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ করতেন।

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ লিটন মিয়া আহত হওয়ার পর লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফের কাছে চিঠি দেন।

আজ বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি-৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বরাত দিয়ে মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বলেন, লিটন মিয়ার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে আজ সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় বিএসএফের পক্ষ থেকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে লিটনের মৃত্যুর খবর শুনে আহাজারি করেন স্বজনরা। মা দুলালী বেগমের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। কিছুক্ষণ পরপর তিনি মূর্ছা যাচ্ছেন। দুই ভাই ও এক বোনের সংসারে লিটন বড়। বাবা মোকছেদ দরিদ্র কৃষক। লিটন পাওয়ার টিলার চালিয়ে সংসার চালাতেন। কর্মক্ষম ছেলে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা মোকছেদ।

লিটনের মা দুলালী বেগম বলেন, ‘ভুল করলে সাজা আছে। এটা কোন সাজা? আমার ছেলে ভুল করে না হয় সীমান্তে গেছে। এ জন্য তাকে গুলি করে মারতে হবে?’

মা দুলালী বেগম ছেলের লাশ ফেরত চেয়ে বলেন, ‘আমার ছেলেকে মারার অধিকার কারও নেই। ও কী অন্যায় করেছে? সীমান্তে গেলেই কি গুলি করে মারতে হবে?’

লিটনের সঙ্গে থাকা লোকজন দাবি করেন, ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দলের সঙ্গে লিটন সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে যায়। এ সময় বিএসএফ ধাওয়া দিলে অন্যরা পালিয়ে আসতে পারলেও লিটন তাদের হাতে আটকা পড়ে। বিএসএফ সদস্যরা তাকে টানা এক ঘণ্টা মারধর করে। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় দুই রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়।

তাদের ধারণা, লিটনকে শারীরিক নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পরে চিকিৎসার নাটক সাজিয়ে তারা লাশ ফেরত দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: সীমান্তে দুই বাংলাদেশির হতাহত প্রমাণ করে স্বাধীনতা চরম সংকটে: ফখরুল

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর