গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভরত পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আঞ্জুয়ারা খাতুন (২৮) নামের এক নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া জামাল উদ্দিন নামে আরও এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক।
আজ বুধবার সকালে সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগর কাশিমপুর জরুন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নিহত আঞ্জুয়ারা খাতুন সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার চর নাটিপাড়া গ্রামের মো. জামাল হোসেনের স্ত্রী।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারী শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী মো. জামাল হোসেন বলেন, তার স্ত্রীর শরীরে রাবার বুলেট লেগেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ডিবি) মোহম্মদ ইব্রাহিম খান জানান, সকালে শ্রমিক বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এতে শ্রমিক মারা যাওয়ার কথা নয়। গুরুতর আহত অবস্থায় একজন নারী শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ন্যূনতম বেতন সাড়ে ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। গতকাল পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রস্তাব করে মজুরি বোর্ড। পরে মজুরি বোর্ড ঘোষিত বেতন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ সকাল থেকে কোনাবাড়ি এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্টঅল সোয়েটারসহ আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করে। এতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
সকাল ৮টার দিকে কয়েকশ শ্রমিক কাশিমপুরের জরুন মোড়ের সামনে একত্রিত হয়ে লাঠি সোঁটা নিয়ে মিছিল করতে থাকে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে উত্তেজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এক পর্যায়ে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রওশন মার্কেটের হয়ে হাতিমারার দিকে এগিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভের ডাক পোশাকশ্রমিকদের
