বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেই কেবলমাত্র পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয় পর্যলোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে জুলাইয়ে ইইউ থেকে একটি ‘স্বাধীন পর্যালোচনা মিশন’ আসবে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় ‘ইউরোপ ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকায় ইইউ জোটের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নও এ দেশে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। যেই নির্বাচন হতে হবে সংঘাতহীন। ওই স্বাধীন পর্যালোচনা মিশন দেখবে পূর্ণাঙ্গ ইইউ পর্যবেক্ষক দল পাঠানো কার্যকরী ও সম্ভাব্য কি-না।’
ইইউ মিশন প্রধান জানান, ওই রিপোর্ট উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি জোসেফ বোরেলের কাছে যাবে। তিনি বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেশে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেছেন, যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়, তাহলে পর্যবেক্ষক মিশন তখনই মোতায়েন করা হবে।
তবে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য কোন কোন বিষয়কে বিবেচনায় নেয়া হবে, তা পর্যালোচনা মিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তিনি (জোসেফ বোরেল) বলেননি যে, অমুক দল অংশগ্রহণ করতে হবে বা তমুক দল অংশগ্রহণ করতে হবে। পর্যালোচনা দল অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এই বিষয়টি দিকে সতর্কতার সঙ্গে দেখবে। তারা সব দলের সঙ্গে বৈঠক করবে এবং পর্যবেক্ষণ দেবে যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসাবে কী কী বিষয় বিবেচনায় নেয়া হবে।’
হোয়াইটলি বলেন, ‘এ কারণে আমরা এখন বলতে পারি না, অমুক দল যোগ দিলে বা না দিলে অংশ্রগহণমূলক নির্বাচন হবে কি-না। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয় দেখবে এবং তাদের রাজনৈতিক অভিমত দেবে। পরে উচ্চ প্রতিনিধি তার সিদ্ধান্ত নেবেন।’
অপর এক প্রশ্নে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় জানেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধি (জোসেফ বোরেল) বলেছেন, আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাতে প্রস্তুত। আপনারা আরও জানেন, আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের পর্যবেক্ষক মিশন মোতায়েনের বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছি। পর্যবেক্ষক পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা যাতে না হয়, সেটার সিকিউরিটি হিসাবে এটা দরকার ছিল।’
পর্যালোচনা দলকে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল আখ্যা দিয়ে হোয়াইটলি বলেন, ‘এটা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রথম ধাপ। এরা ইইউ কর্মকর্তা বা আমলা নয়।’
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দলটি সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও মিডিয়ার সঙ্গে বসবে। এটা শুধু নির্বাচনের বিষয় নয়, এখানে দেখা হবে একটি নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ও, যাতে নিরাপত্তার বিষয়ও রয়েছে।’
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘আমরা শুধু বিএনপির সাথে বসিনি। আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসেছি। বিএনপি প্রকাশ্যে যে কথাগুলো বলে সেগুলো আমাদেরকেও বলেছে। আমরা সব দলের সঙ্গে বসব। আমরা এখানে রাজনীতিতে মধ্যস্থতা কিংবা হস্তক্ষেপের জন্য না; শোনা ও বোঝার জন্য আমরা এখানে। আমরা সব দলের সঙ্গেই বসবো। আমরা এখানে কোনো সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা দেখতে চাই না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মানুষও এটাই চায়।’
সংবাদ সম্মেলনে ইতালি, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন ও স্পেনের মিশন প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।