ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ও আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ মিলছে না। গত শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে তিনি নিখোঁজ। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে গণমাধ্যমের কাছে এ অভিযোগ করেন আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা।
আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি নিখোঁজ হওয়াতে নির্বাচনে সাত্তারের বিজয়ের পথ আরও পরিষ্কার হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ গত ৭-৮ দিন পূর্ব থেকেই চাপে ছিলেন। এরই মাঝে তার প্রধান কর্মী মুসাকে (৮০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই রাতেই নিখোঁজ হয়ে যায় নির্বাচনের সমন্বয়কারী আসিফের শ্যালক শাফায়েত সুমন। এরপর থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন আসিফের নির্বাচনী মাঠের সকল কর্মী সমর্থকরা।
পারিবারিক সূত্র আরও জানায়, বাস ভবনের চারদিকে দিনরাত বসে থাকেন অপরিচিত লোকজন। আসিফের কর্মীরা কোথায় যায়? বাসায় কে আসলো? বাসা থেকে কে গেলো? এইসব দেখেন। আবার ছবিও তুলেন। আসিফের স্ত্রী গোপনে নির্বাচনী প্রচারণা করতে গিয়েও বিপাকে পড়েন। পরিবারের সদস্য থেকে শুরু মাঠের কর্মীরা নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
তবে আসিফ নিখোঁজের বিষয়টি এখনো থানায় জিডিও করেননি তার পরিবার।
আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আসিফকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ আছে। তিনি কোথায় এবং কী অবস্থায় আছে তা বুঝতে পারছি না। প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা যাওয়া করছে। এখন নির্বাচনে যে ভোট কেন্দ্রে এজেন্ট দেবো, তাও খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ সবাইকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি নিজেই পালিয়ে ছিলাম। আজকের মধ্যে খোঁজ না পেলে রাতেই একটা কিছু করবো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আবু আসিফ আহমেদের পরিবার থেকে এমন কোনো বিষয়ে লিখিত দেওয়া হয়নি। তার বাড়ির সামনে যে লোকজনের ছবি তোলার কথা বলা হচ্ছে, তা আমদের জানা নাই। অন্য কোনো সংস্থার লোকজন হতে পারে।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তারা হলেন-বিএনপির বহিষ্কৃত পাঁচবারের সাবেক সাংসদ আব্দুস সাত্তার ভূইয়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাষানী, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। এদের মধ্যে জিয়াউল হক মৃধা প্রতীক বরাদ্দের পর বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।