বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৫ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আইন-আদালত

আত্মসমর্পণের পর আবারও কারাগারে সম্রাট


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৪ মে, ২০২২ ২:৫৩ : অপরাহ্ণ
আজ আদালতে আত্মসমর্পণের পর ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

আত্মসমর্পণের পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ও রাজধানীতে ক্যাসিনোকাণ্ডের হোতা হিসেবে পরিচিত ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এজলাস কক্ষে উপস্থিত হন সম্রাট।

শুনানিতে মানবিক দিক বিবেচনা করে জামিন দেওয়ার আবেদন করেন সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।

সম্রাটের আইনজীবী আদালতকে বলেন, আসামি সম্রাট অসুস্থ। হাসপাতাল থেকে এসেছেন। আসামি সিসিইউ’তে চিকিৎসারত ছিলেন। এরআগে মানবিক কারণে চিকিৎসার জন্য তাকে জামিন দেয়া হয়। মহামান্য হাইকোর্ট জামিন বাতিল করে দিয়েছেন। তবে তার চিকিৎসার বিষয়টি দেখতে বলেছেন। এছাড়া তিনি এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেননি। তাই আবারও মানবিক দিক বিবেচনা করে আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করছি।

আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আরও বলেন, আসামি সিসিইউ থেকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ইতিহাস গড়েছেন। কারণ এমন গুরুতর চিকিৎসা থেকে কেউ বাইরে বের হন না। আসামি হাসপাতাল থেকে আসার সময় চিকিৎসকরা নারাজ ছিলেন। কারণ বাইরে গেলে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই তারা বন্ড সই করে আসতে বলেন। আসামি বন্ড সই করে আসেন।

জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আসামির জামিন দেয়ায় আইনের ব্যতয় ঘটেছে বলে মহামান্য হাইকোর্ট বলেছেন। তাই আসামির জামিন বাতিল করে দিয়েছেন। এছাড়া আসামি যদি জামিন চান তাহলে নতুন করে জামিনের আবেদন করতে হবে। নতুন করে মেডিকেল রিপোর্ট করতে হবে। উচ্চ আদালত এ জামিন বাতিল করে দিয়ে ৩০ মে শুনানির দিন ধার্য করেছেন। তাই মহামান্য আদালতের কাছে আবেদন হাইকোর্টের আদেশ বজায় রেখে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হোক। হাইকোর্টের আদেশের পর নতুন সিদ্ধান্ত নেন। তাই এমন আদেশ দেয়া হোক যেন উচ্চ আদালতের আদেশ বজায় থাকে।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সম্রাটের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ১১ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্রাটের জামিন দেন একই আদালত। সবকটি মামলায় জামিন পাওয়ায় ওই দিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল থেকে কারামুক্ত হন তিনি।

তিন শর্তে তাকে জামিন দেয়া হয়। এগুলো হলো-অসুস্থতা বিবেচনা করে, বিদেশে না যাওয়ার শর্তে এবং প্রতিটি ধার্য তারিখে আদালতে হাজিরা দেয়ার শর্তে।

এর আগে গত ১১ এপ্রিল রমনা থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় এবং গত ১০ এপ্রিল অস্ত্র ও অর্থপাচারের মামলাতে জামিন পান সম্রাট।

ক্যাসিনো কাণ্ডে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাটকে তার সহযোগী এহসানুল হক আরমানসহ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এরপর তার কাছে বিদেশি মদ পাওয়ায় সে সময় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, সম্রাট রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইল এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। তিনি আনুমানিক ১৯৫ কোটি টাকা এনামুল হক আরমানের সহায়তায় সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করেন।

২০১৯ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর সম্রাটের নাম আসে। এরপর থেকেই তাকে নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। অভিযান শুরুর পর সম্রাটসহ হাইপ্রোফাইল কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর