শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৯ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা খেলা

হতাশায় শুরু হওয়া দিনে মুশফিক-লিটনের মহাকাব্য


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৩ মে, ২০২২ ৬:১৯ : অপরাহ্ণ
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মহাকাব্যের রচয়িতা মুশফিক-লিটনের আলিঙ্গন। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

যারা একটু দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন তারা সকাল সকাল মেজাজ হারিয়েছিলেন বাংলাদেশের খেলার খবর শুনে। চট্টগ্রামে এতো ভালো খেলার পর মিরপুরে এসে কী হলো যে ৪০ মিনিটের মধ্যে টপাটপ ৫টি উইকেট হারিয়ে বসলো? তাও ম্যাচের মাত্র ৪০ মিনিট পেরিয়ে ৭ ওভারের খেলা শেষ হয়েছে।

স্কোর বোর্ডে তখন মাত্র যোগ হয়েছে ২৪ রান। কিন্তু সাজঘরে গিয়ে বসে আছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান।

কিন্তু এরপরের গল্পটা দেখে ওই তাদেরই চক্ষু চড়কগাছ। কেননা পরের ৭৮ ওভারে আর কোনো উইকেটের পতন ঘটেনি।

মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের মহাকাব্যিক জুটিতে তৈরি হয়েছে ইতিহাস। ওলট-পালট হয়েছে রেকর্ডবুক। বিস্মিত হয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। রান যোগ হয়েছে আরও ২৫৩।

আজ সোমবার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে ৮৫ ওভারের খেলা শেষে ২৭৭ রান তুলেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।

মুশফিক ২৫২ বল খেলে ১১৫ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। আর লিটন দাস ২২১ বলে ১৩৫ রান করে অপরাজিত আছেন।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। খেলা শুরু হওয়ার দুই মিনিটের মাথায় ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরে দলকে বিপদে ফেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ছয় টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে চতুর্থবার শূন্যতে ফিরলেন জয়।

জয়ের ধাক্কা না সামলাতেই হতাশায় ডোবান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল। দারুণ ক্যাচ নিয়ে তামিমকে শূন্যতে বিদায় করেন জয়াবিক্রমা।

দুই ওপেনারকে হারানোর চাপ সামলাতে পারেননি মুমিনুল হকও। ৯ বলে ২ চারে ৯ রান করে আসিথা ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে ডিকওয়েলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টাইগার সেনাপতি।

এরপর বেশি দূর এগোতে পারেননি শান্তও। ২১টি বল মোকাবেলা করলেও ৮ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরে যান রাজিথার বলে।

ঠিক পরের বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সাকিব আল হাসান। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি সাকিবের। বিনা রানে ফিরে যান ড্রেসিংরুমে।

রাজিথা ৩টি এবং ফার্নান্দো ২টি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন।

এরপরের গল্পটা শুধুই মুশফিক আর লিটনের। যে গল্পে ছিল দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই, ছিল প্রতিরোধ, ছিল গতি আর ঘূর্ণি মোকাবেলার কাহিনী। আর প্রতিরোধ ও সম্মান ফেরানোর গল্প লিখতে যেয়ে তা হয়ে গেছে মহাকাব্য। এই লড়াই ঠাঁই করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়।

২৫৩ রানের জুটি গড়ার পথে দুজনই হাঁকিয়েছেন শতক। শুরুতে লিটন তুলে নেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক আর পরে মুশফিক তুলে নেন নবম শতক।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভেঙেছেন লিটন-মুশিফিক। আগের রেকর্ডেও মুশফিকের নাম আছে।

২০০৭ সালে আশরাফুলের সাথে জুটি গড়ে ১৯১ রান করেছিলেন মুশফিক। ১৫ বছর পর সেই রেকর্ড ভাঙলো।

এ ছাড়াও এবারই প্রথম ষষ্ঠ উইকেটে ২০০ রানের জুটি গড়তে পারলো বাংলাদেশ। তবে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান ৩৯৯ জনি বেয়ারস্টো ও বেন স্টোকসের।

তবে ২৫ বা তার চেয়ে কম রানে ৫ উইকেট পড়ার পর সর্বোচ্চ জুটি এখন মুশফিক-লিটনের। ২৫ এর নীচে ৫ উইকেট পড়ার পর আগে সর্বোচ্চ জুটি ছিল ২১৮। লিটন মুশফিক-সেই রেকর্ডও ভেঙেছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৮৫ ওভারে ২৭৭/৫ (জয় ০, তামিম ০, শান্ত ৮, মুমিনুল ৯, মুশফিক ১১৫*, সাকিব ০, লিটন ১৩৫*; রাজিথা ১৯-৫-৪৩-৩, আসিথা ১৭-২-৮০-২, জয়াবিক্রমা ২৯-৯-৮১-০, রমেশ ১২-০-৪১-০, ধনাঞ্জয়া ৪-০-১৫-০, করুনারত্নে ৪-১-৮-০)।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর