ইউক্রেনের বন্দরে আটকা পড়া ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ নামের বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলার পর নাবিকরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
জীবন বাঁচানোর জন্য জাহাজ থেকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন নাবিকেরা।
তারা জানিয়েছেন, সবাই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। জাহাজে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। জরুরি পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে তারা চলছেন। সেটা বন্ধ হয়ে গেলে তাদের জাহাজে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে।
https://youtu.be/3HaK-4sURkc
ভাইরাল হওয়া ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে জাহাজটির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আউয়ালকে বারবার বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের জাহাজে রকেট হামলা হয়েছে। একজন মারা গেছেন। আমাদের জাহাজে পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি পাওয়ার সাপ্লাইয়ে আমরা চলছি। আমরা মৃত্যুর সম্মুখীন। আমাদের এখনও উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে, দেখেন। আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি। আমাদের বাঁচান।’
৩১ সেকেন্ডের অপর এক ভিডিওতে জাহাজটির আরেকজন নাবিক বলেন, ‘আমি আসিফুল ইসলাম আসিফ। আমরা নাকি পোল্যান্ডে চলে গেছি নিরাপদভাবে। এটা ভুল নিউজ। আমাদের প্লিজ এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।’
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় নোঙর করে রাখা জাহাজটিতে গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে) গোলা আঘাত হানে। এতে এক বাংলাদেশি নাবিক নিহত হন। ওই নাবিকের নাম হাদিসুর রহমান। তিনি জাহাজটিতে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।
জানা গেছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি নামের ‘বাল্ক ক্যারিয়ার’ জাহাজটি ইউক্রেনের ওই বন্দরে পৌঁছায়।
তুরস্কের এরেগলি বন্দর থেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি খালি অবস্থায় সেটি ওলভিয়া বন্দরে যায়।
সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালির র্যাভেনা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন।
শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ।
এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।