রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৮:১৬ : অপরাহ্ণ
হামলার দ্বিতীয় দিনেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের প্রধান একটি বিমানবন্দর এবং বিমানঘাঁটি দখলে নিয়ে নিয়েছে রাশিয়ান সেনারা।
এ সময় ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনীর ২০০ জনেরও বেশি সদস্যকে তারা হত্যা করেছে।
আজ শুক্রবার প্রায় ২০০ হেলিকপ্টার ব্যবহার করে অভিযান চালিয়ে হোসটোমেল নামের ওই বিমান ঘাঁটি দখল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, হোসটোমেল বিমানঘাঁটি দখল করতে ২০০টি হেলিকপ্টার এবং সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ডিভিশন ব্যবহার করা হয়েছে।
হোসটোমেল বিমানবন্দর দখলে নেওয়ায় ভারী সামরিক সরঞ্জাম এবং সৈন্য পরিবহনকারী রাশিয়ার বিমান অবতরণ করতে পারবে সেখানে।
বিমানবন্দরটিতে দীর্ঘ রানওয়ে থাকায় রাশিয়া থেকে সরাসরি কিয়েভের ওই বিমানবন্দরে সৈন্য পরিবহন করা যাবে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগোর কোনাশেনকোভ বলেছেন, রাশিয়ান বিমানবাহিনী হোসটোমেল দখলে নেওয়ার জন্য ২০০টি হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে এবং ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনীর ২০০ জনেরও বেশি সদস্যকে হত্যা করেছে।
তবে এই অভিযানে রাশিয়ার কোনো সেনা নিহত হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
যদিও ইউক্রেন পাল্টা দাবি করে বলেছে, হোসটোমেল বিমানবন্দরে সংঘর্ষে ব্যাপক রুশ সৈন্য হতাহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিনেমার নায়ক হয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট
এর আগে রাশিয়ান সেনারা আন্তোনভ নামের একটি বিমান ঘাঁটিও দখল করে নেয়।
ওদিকে, কিয়েভ শহরের মেয়র বলেছেন, ইউক্রেনের রাজধানী এখন প্রতিরক্ষামূলক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বলেছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের নির্দেশে অভিযান শুরুর পর বৃহস্পতিবারই রুশ সৈন্যরা কিয়েভের উপকণ্ঠে পৌঁছায়।
সেখানে পৌঁছানোর পর হেলিকপ্টার করে রাশিয়ার সৈন্যরা ওবোলোনস্কির কাছের একটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।
ওবোলোনস্কি কিয়েভের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠের ডাইমার এবং ইভানকিভ শহরে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। সেখানে রাশিয়ার বেশ কিছু সাঁজোয়া যান অগ্রসর হতে দেখা গেছে।
গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, ইউক্রেনে পাল্টা প্রতিরোধে রাশিয়ার অন্তত ৪৫০ সৈন্য নিহত হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করলেই কেবল কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় মস্কো প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, নব্য-নাৎসিরা ইউক্রেন শাসন করুক মস্কো তা চায় না।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ সৈন্যদের প্রবেশের পর এসব কথা বলেছেন তিনি।
রাশিয়ার এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনের বর্তমান সরকারকে গণতান্ত্রিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না মস্কো।
২০১৪ সালে গণতন্ত্রপন্থী প্রতিবাদকারীদের আন্দোলনের মুখে রাশিয়া-সমর্থিত ইউক্রেনের সরকারের পতন ঘটে। এরপর সামরিক অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখলে নেয় রাশিয়া। একই সঙ্গে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর সাথে লড়াইরত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন জানায় মস্কো।
এর সাত বছর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে রুশ সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন।
ইউক্রেনের বেশিরভাগ শহরে টানা হামলা, গোলাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর রাজধানী কিয়েভে পৌঁছেছে রুশ সৈন্যরা।
আরও পড়ুন:
কিয়েভে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার সেনারা, তুমুল লড়াই
একা লড়ছি, কাউকে পাশে পাচ্ছি না: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট
আত্মসমর্পণ করছে ইউক্রেনের সেনারা, রাশিয়ার দখলে বিমানবন্দর
রাশিয়ার ৫০ সেনা হত্যা, ৬ যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি ইউক্রেনের
প্রাণভয়ে রাজধানী ছেড়ে পালাচ্ছেন ইউক্রেনের বাসিন্দারা, সড়কে দীর্ঘ যানজট
রাশিয়ার বোমা হামলায় ৮ জন নিহত, দাবি ইউক্রেনের
যুদ্ধ শুরু, ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রাশিয়ার