টিউলিপ (শেখ রেহেনার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকী) নামের কারণে নেদারল্যান্ডসের টিউলিপ কোম্পানি থেকে ২০০১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১০ হাজার কম্পিউটার কেনেননি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নবনির্মিত জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ‘৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিই, প্রযুক্তি শিক্ষার ব্যবস্থা করি এবং সস্তায় কেনার জন্য কম্পিউটার ও এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ওপর থেকে শূল্ক কমিয়ে দিই, শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন আমরা আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম যে, বিভিন্ন স্কুলে আমরা কম্পিউটার দেবো। শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার শিখবে। এ জন্য বিভিন্ন কম্পিউটার সংগ্রহ করি। পরে ১০ হাজার কম্পিউটার কেনার একটি প্রকল্প হাতে নিই। কম্পিউটার কেনার জন্য তখন নেদারল্যান্ডসের সরকার একটা প্রস্তাব দিয়েছিল যে, তারা অর্ধেক খরচ দেবে, আমরা দেব বাকিটা। শর্ত হচ্ছে-কম্পিউটার কিনতে হবে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি থেকে। আমরা এতে রাজি হয়ে যাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে-নেদারল্যান্ডসের একটি ফুলের নাম টিউলিপ আপনারা জানেন। তাদের কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানের নামও টিউলিপ নামে। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর আমাদের অতি জ্ঞানী তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিএনপি ওয়ালারা (নেতৃবৃন্দ) বোঝায় যে, শেখ রেহেনার মেয়ের নাম টিউলিপ। কাজেই নেদারল্যান্ডসের সেই কোম্পানিটিও টিউলিপের নামে। কাজেই সেখান থেকে কম্পিউটার নেওয়া যাবে না। তাই উনি নেদারল্যান্ডস থেকে কম্পিউটার আনার উদ্যোগটি বাতিল করে দেন।’
আরও পড়ুন: ৩ মাস পর প্রকাশ্যে এলো বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর ফলে নেদারল্যান্ডসের সেই কোম্পানি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলা পরিচালনা করতে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয়। এতে অনেক টাকা খরচ হয়। বাংলাদেশ একটি শাস্তি পায়। প্রায় ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। ১০ হাজার কম্পিউটার তো গেলই, উল্টো আরও ৬০ কোটি টাকা দিতে হলে দেশের সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্তে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ধরনের সরকারপ্রধান থাকলে দেশের উন্নতি কীভাবে হবে আপনারাই ভালো জানেন। পরে আমরা ক্ষমতায় এসে অ্যানালগ টেলিফোনগুলো ডিজিটাল করে দিই। দেশে তখন একটা মাত্র মোবাইল ফোন কোম্পানি সেটিও খালেদা জিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের। এক একটা ফোনসেটের দাম ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ফোন করলেও প্রতি মিনিটে ১০ টাকা, ধরলেও ১০ টাকা। আমি ‘৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে এটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিই। ফলে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। দাম কমে এবং সারা দেশের টেলিযোগাযোগকে আমরা ডিজিটাল করি। সেই সঙ্গে স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের উদ্যোগে নিই।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
আরও পড়ুন: ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হলে আ. লীগ ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারতো না’