রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ণ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সমর্থকদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের এক আইনজীবী নিহত হন। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টা আজ রাতে এক বার্তায় জনগণকে শান্ত থাকার এবং কোনো অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চট্টগ্রাম শহরে বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা দৃঢতার সাথে উল্লেখ করেন যে অন্তর্বর্তী সরকার যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত ও বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে জামিন না দেওয়ার জেরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে তাণ্ডব চালিয়েছে তার সমর্থকরা। এ সময় তারা কুপিয়ে চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করে।
জানা গেছে, নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফ চট্টগ্রামে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান।
মোক্তার উদ্দিন সাগর নামে এক আইনজীবী জানান, আমার চোখের সামনে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কোপানো হয়েছে।
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় চিন্ময় দাসকে গতকাল সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আজ কঠোর নিরাত্তায় সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন চিন্ময় দাসের সমর্থকরা।
জামিন না মঞ্জুর হওয়ার পর বিকেল ৩টার দিকে চিন্ময় দাসকে প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় তার সমর্থকরা পুলিশকে বাধা দেয়। তারা চট্টগ্রাম কোর্ট ভবনের নিচে সড়কের মাঝে শুয়ে পড়েন, ভ্যানের চারপাশে মানবঢাল তৈরি করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা প্রিজনভ্যান আটকে রাখার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বাধাপ্রধানকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে চিন্ময় দাসের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আদালত এলাকার মসজিদসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার পর ওই এলাকার পরিস্থিতি থমথমে হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম আদালত ভবনে ইসকন সমর্থকদের তাণ্ডব, আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা