বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ


১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা।

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০১ পূর্বাহ্ণ

আজ ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সিপাহী-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পাল্টে গিয়েছিল। তাদের ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমেই রক্ষা পায় সদ্য অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হন শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর ক্ষমতায় আসেন খন্দকার মোশতাক। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পান মুক্তিযুদ্ধের বীরউত্তম মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। ৩ নভেম্বর মোশতাক সরকারকে উৎখাতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থান করা হয়। গৃহবন্দি করা হয় সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। দেশ সরকারহীন হয়ে পড়ে। খন্দকার মোশতাকের কাছ থেকে পদোন্নতি আদায় করে নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন খালেদ মোশাররফ।

৬ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ বঙ্গভবনে গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে মন্ত্রিসভা বাতিল ও জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন। একই দিনে তিনি প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে বসান। একপর্যায়ে ৬ নভেম্বর গভীর রাতে সেনাবাহিনীর সাধারণ সিপাহীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ওই রাতে জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে সৈনিকরা।

সেই অভ্যুত্থানে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়ে সর্বস্তরের জনতা রাজপথে নেমে আসে। সেনা ট্যাঙ্কে ফুলের মালা পরিয়ে জনগণ সিপাহি বিপ্লবকে অভিনন্দন জানায়। বেতারে ‘আমি জিয়া বলছি’ ভাষণ শুনতে পায় দেশবাসী। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিজেকে সুসংহত করেন একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা প্রতিরোধে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া মেজর জিয়া। ৭ নভেম্বরের পর তিনি সামরিক শাসক থেকে রাজনীতিকে পরিণত হন, চলে আসেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে। এরপর তার নেতৃত্বে শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা। এতে স্বস্তি ফিরে আসে জনগণের মনে।

 

তারপর থেকেই ৭ নভেম্বর পালিত হয় ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। বিএনপি সরকারের আমলে এ দিনটিতে ছিল সরকারি ছুটি।

কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিপ্লব ও সংহতি দিবস বাতিল করে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় ফিরে আবারও দিবসটি সরকারিভাবে পালন শুরু করে। ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সরকারিভাবে পালিত হয়। তবে পরের বছর ছুটি ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ফিরে ২০০৯ সাল থেকে দিবসটি ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ নামে পালন শুরু হয়।

জাতীয় ইতিহাসের এই দিনটি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া, দিবসটির গুরুত্বারোপ করে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

দিনটি উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এদিনে দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অভূতপূর্ব অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত। ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।’

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর