রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ২:১২ পূর্বাহ্ণ
সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, র্যাব ফারুক খানকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় একাধিক মামলার আসামি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান। তিনি গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ফারুক খান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। শিল্পপতি, সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান আজিজ খানের ভাই তিনি।
সুমন ইসলাম (২৩) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার মা কাজলী গত ২০ সেপ্টেম্বের সকালে লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৩৮৮ জনকে আসামি করে সাভারের আশুলিয়া থানায় ওই মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ বক্সের সামনে সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার উদ্দেশে নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হন মাদরাসার শিক্ষার্থী সুমন ইসলাম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার হাবিবকে ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট দুপুরে মারা যান তিনি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভারত পলায়নের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন সকাল ১০টার দিকে বাইপাইলে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান মাদরাসাছাত্র সুমন ইসলাম। নিহত সুমন ইসলাম পঞ্চগড় জেলার বোদা থানার আমিননগর শিকারপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসন (মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলার ৭ ইউনিয়ন) থেকে জয়ী হয়ে এমপি হয়েছিলেন ফারুক খান।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। কেউ কেউ দেশ ছাড়তে পারলেও অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মিলিয়ে ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, ১৪-দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক গ্রেপ্তার