ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৮তম জন্মদিন উপলক্ষে তার ছবিতে গণ জুতা নিক্ষেপ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে একদল শিক্ষার্থী।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পেছনে মেট্রোরেলের একটি পিলারে শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার টানিয়ে জুতা নিক্ষেপের এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।
‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘মুজিব থেকে হাসিনা, ফ্যাসিবাদ মানি না’, ‘ইতিহাসের নোংরা দিন, খুনী হাসিনার জন্মদিন’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, খুনী হাসিনার বিচার চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
রাজু ভাস্কর্যের পেছনে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি ব্যানার টানানো হয়। এসময় একদল শিক্ষার্থী সেখানে জুতা মারার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫টি জুতা একসাথে নিক্ষেপ করার সুযোগ পান। কেউ যদি টানা ৫ বার শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানারে জুতা লাগাতে পারেন তাহলে তাকে পুরস্কার স্বরূপ একটি কোমল পানীয় ‘মোজো’ দেওয়া হয়।
জুতা নিক্ষেপ করা একজন নারী বলছিলেন, ‘আরও জুতা মারার ইচ্ছে ছিল, সময় কম তাই পারিনি। আরেকটা প্রোগ্রাম আছে, সেখানে যাচ্ছি।’
জুতা মারার পর মোজো পেয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোজো পাওয়ার জন্য (জুতা) মারতে আসিনি, আপনি চাইলে এটা নিতে পারেন।’
ওই নারী আরও বলেন, ‘শুনলাম আজ তার (শেখ হাসিনা) জন্মদিন। তাই তাকে উপহার দিতে এসেছি। তার উপহার হলো জুতা পিটুনি।’
তিনি বলেন, ‘যেই সরকারই আসুক না কেন, এটা একটি মেসেজ। দেশ সুন্দরভাবে চালাবে। যদি হিতে বিপরীত হয়, আমরা তোমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো এবং প্রয়োজনে জুতাপেটা করবো।’
জুতা কেন মারছেন- প্রশ্ন করা হলে একজন তরুণ বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) একজন খুনি। তিনি আমাদের অনেক ভাইয়ের রক্ত ঝরিয়েছেন। অনেক মানুষ খুন করেছেন, এ জন্য…।’
আরেক শিক্ষার্থী বলছিলেন, ‘তাকে জুতা মারলে হবে না, তার ফাঁসি চাই।’
প্রতিযোগিতার আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মুনেম আল আজাদ বলেন, ‘সাবেক স্বৈরাচার সরকার দেশের মানুষের উপর যে নিপীড়ণ চালিয়েছে তার হিসেব নেই। এখন সে জীবন বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে গেলেও আমরা সেই ক্ষতচিহ্ন বুকে বয়ে বেড়াচ্ছি। সেজন্য আমরা আজকে তার জন্মদিনের মত নোংরা দিনে তার ছবিতে গণ জুতা মারা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আমরা চাই এই দিনটি ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকুক। মানুষ জানুক স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর ছিলো।’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক আদালতে শেখ হাসিনার বিচার নিয়ে আলোচনা