মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪ | ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১২ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা বাণিজ্য

উচ্চ ফলনশীল রাবার চাষে সহায়তা দেবে ভারত


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৩৪ : অপরাহ্ণ
ভারত সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন রাবার বোর্ডের ৫ সদস্যের চট্টগ্রাম সফর।
Rajnitisangbad Facebook Page

বাংলাদেশে উচ্চ ফলনশীল রাবার চাষে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ভারত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের একটি হোটেলের রেসিডেন্স হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ কথা জানানো হয়।

ভারত সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন রাবার বোর্ডের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম সফর করে। প্রতিনিধি দলের প্রধান ও ভারতীয় রাবার বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ভাসান তাগেসান এ সহায়তার কথা জানান।

এর আগে ভারতের রাবার বোর্ডের প্রতিনিধি দল বিএফআইডিসি’র অধীন ফটিকছড়ির দাঁতমারা রাবার বাগান, নার্সারি ও রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ রাবার বোর্ড, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতিবিনিয় করেন তারা। বাংলাদেশ রাবার বোর্ড এ সভার আয়োজন করে।

ইন্টারন্যাশনাল রাবার রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (আআরআরডিবি) সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সম্পাদিত ক্লোন এক্সচেঞ্জ সমঝোতা স্মারক চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে ক্লোন গ্রহণ সংক্রান্ত এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান।

সৈয়দা সারওয়ার জাহান বলেন, আমাদের দেশে রাবার উৎপাদনের জন্য উর্বর ভূমি ও পরিবেশ রয়েছে। তারা সেখানে আমাদের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগ করতে পারে। তারা আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছে, আমাদের বর্তমানে যেসব জাত রয়েছে সেগুলো যেন প্রোপারলি নার্সিং করি। একই সঙ্গে এখানের জন্য যেগুলো সুইটেবল হবে সেগুলো তারা আমাদের সরবরাহ করবে। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দেবে। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে প্রতিনিধি দল বিষয়টি ভারতের সরকারের কাছে জানাবে। সরকার অনুমোদন দিলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান ভাসান তাগেসান বলেন, বাংলাদেশের রাবার চাষ সম্পর্কে ধারণা নিতে এসেছি। দুই দেশের আবহাওয়াগত মিল থাকলেও রাবার চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে পার্থক্য রয়েছে। ফলে রাবারের মানের তারতম্য হচ্ছে। উন্নতজাতের গাছের চাষ হলে রাবার উৎপাদন বাড়বে এবং তা ভালোভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে পারলে বিশ্ববাজারে রপ্তানি করা যাবে।

রাবার গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা ১৯৬০ সালের পুরোনো কয়েকটি ক্লোন দিয়ে এখনো রাবার চাষ করছি। ফলে উৎপাদন ভালো হচ্ছে না। আমাদের দেশে প্রতি হেক্টর জমিতে যে পরিমাণ রাবার উৎপাদন হয় সে পরিমাণ জায়গায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে তার পাঁচগুণ বেশি উৎপাদন হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। ভারতীয় রাবার বোর্ড প্রতিনিধি দলকে আমরা ত্রিপুরা রাজ্যের ক্লোন দিতে বলেছি। সেগুলো বাংলাদেশেও ভালো ফলন হবে। পাশাপাশি পরিচর্চার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের কথা বলেছি।

বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মঈনুল ইসলাম বলেন, রাবারের উচ্চ ফলনশীল জাত আমদানির দাবি আমাদের দীর্ঘ দিনের। রাবার খাতে ভারতের অনেক পুরোনো অভিজ্ঞতা। ভারতের রাবার বোর্ডের প্রতিনিধি দল আমাদের বাগান ও কারখানা পরিদর্শন করে আমাদের উন্নত জাতের ক্লোন দেবে বলেছে। এখন প্রয়োজন দ্রুত সেগুলো আনার ব্যবস্থা করা। কারণ ক্লোন দেশে আনার পর নার্সারি ও প্লান্টেশন করে উৎপাদনে যেতে অন্তত ৮ বছর লাগবে। উৎপাদন বাড়লে খরচ কমে আসবে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাজার ধরতে পারবে।

পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ বলেন, বাংলাদেশে যখন ‘সাদা সোনা’ খ্যাত রাবার চাষ শুরু হয়েছে তখন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি বর্তমান সময়ের মতো ছিল না। অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে সেখানে রাবার চাষ শুরু হয়েছিল। আমরা এই খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে চাই। বাংলাদেশ এবং ভারত সরকার রিজিউনাল কো-অপারেশনে আন্তরিক। ভারতের রাবার বোর্ড অনেক পুরোনো; তাদের অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাতে পারি। প্রশিক্ষণ ও টেকনিক্যাল সহযোগিতা পেলে এখাতের উন্নয়ন ঘটবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ছলিমুল হক চৌধুরী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ফজলুল কাদের, সহসভাপতি মোমিনুল হক চৌধুরী, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সালা উদ্দীন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব কাউছার জামাল, সাবেক সহসভাপতি নুরুল ইসলাম মিয়া, ভারতীয় রাবার বোর্ডের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এমজে রাজু, যুগ্ম রাবার কমিশনার সালি এন, পরিচালক (গবেষণা) ড. জেসি এমডি ও সহকারী পরিচালক সাজু কোরিয়ান।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর