বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা বিএনপি

কী প্রস্তাব ছিল সাকিবের, জানালেন মেজর হাফিজ


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৯ মার্চ, ২০২৪ ১২:৩৫ : অপরাহ্ণ
নির্বাচনের আগে বিএনএমে যোগ দিতে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদের হাতে আবেদন ফরম তুলে দিয়েছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদের বাসায় গিয়ে কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএমে (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন) যোগ দিয়েছিলেন ক্রিকেটার ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান।

নির্বাচনের আগে নতুন এ দলে যোগ দিতে মেজর (অব.) হাফিজের হাতেই আবেদন ফরম তুলে দিয়েছিলেন ক্রিকেটের বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। এ ধরনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে আবার রাজনীতিতে আলোচনায় এসেছে কিংস পার্টি।

বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিনের বাসায় সাকিবের বিএনএমের সদস্য ফরম পূরণ করে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি পর্বের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। দলটির তৎকালীন সদস্য সচিব মেজর (অব.) মো. হানিফ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) কামরুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে নতুন দলে না গিয়ে সাকিব আল হাসান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেজর (অব.) হাফিজ দাবি করেছেন, এক আওয়ামী লীগ নেতার প্রস্তাব নিয়ে তার বাসায় যান সাকিব, তবে তিনি ওই প্রস্তাবে রাজি হননি।

মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘সাকিব আল হাসান আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। আমার কাছে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। নির্বাচনের ৪ থেকে ৫ মাস আগে আমার কাছে আসে সাকিব। সেসময় তার সঙ্গে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিটি নিয়ে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে। সাকিবের সঙ্গে আমার ছবিটি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে তা জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এমন কিছু করিনি যার জন্য লজ্জ্বিত হতে হবে।’

মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘আমি ৩২ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে রয়েছি। আমার পক্ষে দল ত্যাগ করা সম্ভব নয়। বয়স হয়েছে আমি আর কিছুদিনের মধ্যে অবসরে যাবো। সামরিক বাহিনীর কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার কাছে আসে নতুন একটি দল খোলার জন্য। তারা হয়তো ভেবেছে আমি বিএনপি ত্যাগ করতে পারি কারণ বিএনপির সঙ্গে মাঝে মাঝে আমার দ্বিমত থাকে। কিন্তু এধরনের কোন বিষয় নেই। আমি বিএনপির সঙ্গেই আছি। আমি বিএনএমে যোগ দেইনি।’

বিএনএম গঠনের সময় নিজের উপর ‘সরকারি চাপ’ প্রসঙ্গে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের চাপ বাড়তে লাগলো। সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ঘোষণাই দিয়ে দিলেন, হাফিজ উদ্দীন নতুন দল গঠন করবেন। আমি বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেছি। এরপর নির্বাচনের দুই মাস আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, বিএনএম বা অন্য দলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাই। শেষ পর্যন্ত এই দলেই থাকবো। বর্তমানে আমি অবসরের চিন্তা করছি। শারীরিকভাবে অসুস্থ।’

এ বিষয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এসব পুরনো জিনিস নিয়ে কে আছে? মন চাইলে করেন (নিউজ), না চাইলে না করেন।’

জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে পরবর্তী সময়ে নতুন দলে না গিয়ে ইউটার্ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন সাকিব আল হাসান।

বিএনএম সূত্র জানিয়েছে, দলের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনের বনানীর বাসায় একাধিক বৈঠক হয়েছে। হাফিজ উদ্দিন আহমদ দলের চেয়ারম্যান এবং সাকিব আল হাসান কো-চেয়ারম্যান হওয়ার কথা ছিল। তারা পরে সুবিধাজনক সময়ে যোগ দেবেন এই আশ্বাস দেওয়ায় দলটির কমিটি গঠনের সময় ওই দুটি পদ শূন্য রাখা হয়েছিল। পর্দার আড়ালে থেকেই হাফিজ উদ্দিন দলটির নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণে ভূমিকা রেখেছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত নানা রাজনৈতিক হিসাবনিকাশ না মেলায় দু’জনের কেউই নতুন দলে যোগদান করেননি।

তারা বিএনএমে যোগ না দেওয়ায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর