সোমবার, ৬ মে, ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

মাসে কোটি টাকা আয় করেও ট্যাক্স দেয় না চট্টগ্রাম চেম্বার


সালাহ উদ্দিন সায়েম প্রকাশের সময় :৯ অক্টোবর, ২০২৩ ৭:০১ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

মাসে কোটি আয় করে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন-চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, কর্পোরেট খাতে প্রতিনিধিত্বকারী এই ব্যবসায়ী সংগঠনটি বছরের পর বছর ধরে সরকারকে আয়কর (ইনকাম ট্যাক্স) দেয় না। বছরে কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে লাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি।

আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, চট্টগ্রাম চেম্বারের টিন সার্টিফিকেট (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) নেই! বছরের পর বছর ধরে টিন সার্টিফিকেট ছাড়াই ব্যাংকে লেনদেন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের ২৪ তলা উচ্চতার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে রয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বারের কার্যালয়। আগ্রাবাদ আয়কর অফিস থেকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দূরত্ব হলো মাত্র ৪০০ মিটার। অথচ নাকের ডগায় থাকা চট্টগ্রাম চেম্বার যে বছরের পর বছর ধরে আয়কর দিচ্ছে না তা জানেন না আয়কর অফিসের কর্মকর্তারা! এমনকি আয়কর অফিসের কর্মকর্তারা জানেনই না যে, চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়কর দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ব্যক্তিশ্রেণি করদাতার মতো কোম্পানির ক্ষেত্রেও আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে মুনাফার ওপর প্রযোজ্য হারে কর দিতে হয়, যাকে বলা হয় করপোরেট কর। নতুন আয়কর আইনে বাণিজ্য সংগঠনকে করপোরেট করের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

তবে এর আগেও আয়কর সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ (এসআরও) নম্বর-২১০ অনুসারে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত বাণিজ্য সংগঠন মুনাফা এবং ব্যবসা হতে আয় করলে কর প্রদান করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু বাণিজ্য সংগঠনগুলো বছরের পর বছর ধরে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আসছে।

আয়কর আইন-২০২৩ অনুযায়ী, বাণিজ্য সংগঠনকে বার্ষিক আয় থেকে ২৭.৫ শতাংশ কর দিতে হবে। আর বাণিজ্য সংগঠনের স্থায়ী আমানত সুদহার (এফডিআর) থেকে ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আগের আয়কর আইনে বাণিজ্য সংগঠনের করের হার ছিল ১৫ শতাংশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কর কমিশনার (কর অঞ্চল-১) মো. শাহাদাৎ হোসেন শিকদার রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম চেম্বার যে এতোদিন ধরে আয়কর দিচ্ছে না তা আমি জানতাম না। তাদের যদি আয়ের উৎস থাকে তাহলে অবশ্যই আয়কর দিতে হবে। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।’

চট্টগ্রাম চেম্বার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের তত্ত্বাবধানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ১৯৬৩ সালের ৬ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে নিবন্ধিত হয়েছিল চট্টগ্রাম চেম্বার। দেশের যেকোনো জায়গায় যৌথ ব্যবসা বা এককভাবে বড় কোনো ব্যবসা করতে চাইলে জয়েন্ট স্টক কোম্পানির সনদ থাকা বাধ্যতামূলক।

জানা গেছে, ১৯৬৩ সালে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে টিআইএন দাখিল করা বাধ্যতামূলক ছিল না। ফলে চট্টগ্রাম চেম্বার তখন টিআইএন ছাড়াই নিবন্ধন করে। ১৯৯৪ সালে কোম্পানি আইন প্রবর্তনের পর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়। আইনে বাধ্যতামূলক করা হলেও নিবন্ধন করে ফেলায় চট্টগ্রাম চেম্বার আর টিন সার্টিফিকেট করার ধার ধারেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ প্রথমে রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘দেশের কোনো চেম্বার কি আয়কর রিটার্ন দাখিল করে? আর চট্টগ্রাম চেম্বার একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।এটা সরকার ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কল্যাণে কাজ করে।’

চট্টগ্রাম চেম্বার মাসে কোটি টাকা আয় করার পরও কেন ট্যাক্স দিবে না-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার এতোদিন চেম্বার থেকে ট্যাক্স নেয়নি। কেন এতোদিন আমাদের থেকে ট্যাক্স নেয়নি তা সরকারকে জিজ্ঞাসা করেন। এখন সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে চেম্বারের ওপর ট্যাক্স আরোপ করেছে। মাস খানেকের মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার ট্যাক্সের আওতায় চলে আসবে।’

চট্টগ্রাম চেম্বারের মতো শতবর্ষী প্রতিষ্ঠানের কেন টিন সার্টিফিকেট নেই?-এ প্রশ্নের উত্তরে ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জিজ্ঞাসা করেন। তারা আমাদের গভর্নিং বডি।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কি চেম্বারগুলোকে টিন সার্টিফিকেট না করতে নির্দেশ দিয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘অবশ্যই’।

বছরে কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি

চট্টগ্রাম চেম্বার প্রতি বছর অডিট রিপোর্ট তৈরি করে। গত অর্থ বছরে (২০২১-২০২২) চট্টগ্রাম চেম্বারের অডিট রিপোর্ট তৈরি করে এস.এফ. আহমেদ এন্ড কোম্পানি নামের একটি অডিট ফার্ম।

অডিট রিপোর্টে, গত তিন বছরে চেম্বারের এফডিআরের ইন্টারেস্ট ও বিভিন্ন আয়ের ওপর ৩ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ৯৮১ টাকার ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গত অর্থ বছরে (২০২১-২০২২)ইনকাম ট্যাক্সের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় ১ কোটি ৫৬ লাখ ২৭ হাজার ১৮৪ টাকা, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৭৮ লাখ ২১ হাজার ১৯২ টাকা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ৬০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়ের ওপর বছরে গড়ে ১ কোটি টাকার বেশি ট্যাক্স আসে।

অডিট রিপোর্টে এই তিন বছরের ইনকাম ট্যাক্স (৩ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ৯৮১ টাকা) প্রভিশন (সঞ্চিত তহবিল) হিসেবে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তবে এর আগের বছরগুলোতে ইনকাম ট্যাক্সের প্রভিশন কত ছিল তা জানা যায়নি।

প্রতি বছর অডিট রিপোর্টে ইনকাম ট্যাক্সকে প্রবিশন করে রাখলেও আয়কর রিটার্ন দাখিল না করে ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে চট্টগ্রাম চেম্বার। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, বার্ষিক হিসাব শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়।

ব্যাংকে এফডিআর আছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা

অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৮টি ব্যাংকে চট্টগ্রাম চেম্বারের এফডিআর ( ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদী) আছে ৬৯ কোটি ২৪ লাখ ১৬ হাজার ৮৬৬ টাকা। এর আগে একই বছরের জুন পর্যন্ত এফডিআর ছিল ৭৬ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ২৩ টাকা।

২৮টি ব্যাংকের মধ্যে এনসিসি ব্যাংকের ঢাকা এলিফ্যান্ট রোড, মগবাজার এবং ফেনীর মহিপাল শাখায় ১৪ কোটি টাকার এফডিআর আছে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক সাজ্জাদ উন নেওয়াজ এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক পদে আছেন। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি নুরুন নেওয়াজ সেলিমের ছেলে।

এ ছাড়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের আগ্রাবাদ ও আনোয়ার শাখায় আছে সাড়ে ৭ কোটি টাকার এফডিআর। বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি মাহবুবুল আলম।

অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর চট্টগ্রাম চেম্বারের আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬ লাখ ৭ হাজার ১৯৮ টাকা। এর মধ্যে এফডিআর থেকে ইন্টারেস্ট বাবদ চেম্বারের আয় হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

ব্যাংকের এফডিআর ছাড়া ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের স্পেস ও হলরুম ভাড়া, পুরনো চেম্বার হাউসের ভাড়া, বাণিজ্য মেলা, মেম্বারদের ফি ও চাঁদা এবং অন্যান্য খাত থেকে চট্টগ্রাম চেম্বার গত বছর আয় করেছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে মাসে প্রায় এক কোটি আর বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকা আয় হয় চট্টগ্রাম চেম্বারের।

চট্টগ্রাম চেম্বার প্রতি বছর প্রাক-বাজেট আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ সভায় উপস্থিত থাকেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান। বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব করতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে চট্টগ্রাম চেম্বার ট্যাক্সদাতার সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব দিয়ে থাকে। অথচ চট্টগ্রাম চেম্বার এনবিআরের চোখে ধুলো দিয়ে বছরের পর বছর ধরে আয়কর ফাঁকি দিয়ে আসছে!

প্রশ্ন উঠেছে, চেম্বারের এই আয় কি ‘অপ্রদর্শিত আয় বা কিংবা কালো টাকা? কারণ আয়কর আইন অনুযায়ী, যে আয় করদাতা কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করে না, তা কালো টাকা বলে ধরে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক-টিআইবি) চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম চেম্বার ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা ট্যাক্সদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এনবিআর কিংবা সরকারকে পরামর্শ দেয়। অথচ চট্টগ্রাম চেম্বার একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও সরকারকে ট্যাক্স দেয় না। আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শিখাও। তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। তাদের এটা দুর্নীতি। এনবিআর চেয়ারম্যান কি এটা জানেন না?’

‘অর্থের লোভে’ চেম্বারকে কব্জায় রেখেছেন দুই ব্যবসায়ী

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রাম চেম্বারের মোট সদস্য রয়েছে ৬ হাজার ৬২৩ জন। এর মধ্যে অর্ডিনারি মেম্বার ৩ হাজার ৪১৭ জন, অ্যাসোসিয়েট মেম্বার ৩ হাজার ৫৫ জন, ডেলিগেট মেম্বার ১৪৩ জন, গ্রুপ মেম্বার ৪ জন এবং টাউন অ্যাসোসিয়েশন ৪ জন।

অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম চেম্বারকে কব্জায় রেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক দুই সভাপতি এম এ লতিফ ও মাহবুবুল আলম। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। লতিফ ২০০৮-১০ মেয়াদে প্রথম চেম্বারের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ আসনে (বন্দর-পতেঙ্গা) আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বাগিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার লতিফ চেম্বারে প্রভাব বিস্তার করা শুরু করেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারে সর্বশেষ ভোটাভুটি হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ। ওই নির্বাচনে এমপি লতিফ সমর্থিত মাহবুবুল আলম-নুরুন নেওয়াজ সেলিম পরিষদ জয়লাভ করে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম-সালাম ঐক্য পরিষদ। কিন্তু ২০১৩ সালের পর চট্টগ্রাম চেম্বারে আর ভোটাভুটি হয়নি। বিনা ভোটে টানা চারবার চেম্বারের সভাপতির চেয়ার কব্জায় রাখেন লতিফের সঙ্গী মাহবুবুল আলম।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, লতিফের ‘ম্যাকানিজমের’কারণে চট্টগ্রাম চেম্বারের ভোট বন্ধ হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের একটি সূত্র রাজনীতি সংবাদকে জানিয়েছে, চেম্বারের ৬ হাজার ৬২৩ জন সদস্যের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার সদস্য লতিফের একক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ছাড়া আরও এক চতুর্থাংশ সদস্য তার প্যানেলের নেতাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। অর্ধেক ভোটার লতিফের প্যানেলের নিয়ন্ত্রণে থাকায় নির্বাচনে তিনি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ান। তার প্যানেলের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতার সাহস করে না।

সংসদ সদস্য এম এ লতিফের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

জানা গেছে, এমপি লতিফের এই ‘ম্যাকানিজমের’ কারণে ২০১৩ সালের পর গত চার মেয়াদে চট্টগ্রাম চেম্বারে আর ভোটাভুটি হয়নি। বিনা ভোটে লতিফের প্যানেলের ব্যবসায়ীদের চেম্বারের নেতৃত্বে বসানো হয়েছে। এমপি লতিফের ঘনিষ্ঠ মাহবুবুল আলম টানা চারবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেম্বারের সভাপতি হন।

সর্বশেষ গত ৮ আগস্ট বিনা ভোটে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি হন এমপি লতিফের ছেলে ওমর হাজ্জাজ। যার বয়স হলো ৩২ বছর। এমপি লতিফের আরেক ছেলে ওমর মুক্তাদিরকে পরিচালক করা হয়েছে। আর মাহবুবুল আলমের মেয়ে রাইসা মাহবুবকে সহসভাপতি পদে বসানো হয়েছে।

চেম্বারের সদস্যদের অনেকে বলছেন, চট্টগ্রাম চেম্বার এখন পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। দুই ব্যবসায়ী নেতৃত্বে না থাকলেও আড়ালে থেকে তারা এই প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক একজন সভাপতি রাজনীতি সংবাদকে বলেছেন, ‘‘চেম্বারের ফান্ডের বিশাল অংকের অর্থের লোভে দুই ব্যবসায়ী নেতা প্রতিষ্ঠানটিকে নিজেদের কব্জায় রেখেছেন। তারা চেম্বারের ফান্ডের টাকা ‘নয়-ছয়’ করেছেন। এই দুই ব্যবসায়ী নেতাকে ভবিষ্যতে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে।’’

আরও পড়ুন:

চট্টগ্রাম চেম্বারে এমপি লতিফের একি কাণ্ড!

শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম চেম্বারে কী হচ্ছে?

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর