সোমবার, ৬ মে, ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু, স্বজনদের দাবি হত্যা


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১১:৩৬ : পূর্বাহ্ণ
দুদকের সাবেক উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে হৃদরোগ জনিত সমস্যায় তার মৃত্যু হয়।

তবে মৃতের স্বজনদের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করতেন। তাকে ওই এলাকার ওমর আলী মাতব্বর রোড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সৈয়দ শহিদুল্লার ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহিদ বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার দুজন এএসআই গিয়ে আমার বাবাকে থানায় নিয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে আমার চাচারা থানায় যান। উনি হার্টের রোগী, ওনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়। বাবাকে থানায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মূলফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইনহেলার ও মেডিসিনও বাবার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি। পরে ১২টার দিকে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম। আমাদের জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। তবে সাম্প্রতিক কোনো মামলার বিষয়ে আমরা শুনিনি। এমনকি আমার বাবা আদালত থেকে কোনো নোটিশও পাননি।’

দুদক কর্মকর্তা শহিদুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের আরেক ছেলে আসিফ শহিদ।

তিনি বলেন, ‘কোনো ওয়ারেন্ট না দেখিয়েই ধস্তাধস্তি করে বাবাকে নিয়ে গেছে তারা। বাবা দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ন্যূনতম সম্মানটা উনাকে দেয়নি তারা। মার্ডার করেছে তারা, স্প্রেটা পর্যন্ত দিতে দেয়নি। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’

আসিফ শহিদ আরও বলেন, ‘বাবাকে দুদিক থেকে দুজন ও একজন পেছনে শার্টের কলার ধরে ছিলেন। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা যেখানে যেখানে আছে সেটা পয়েন্ট আউট করে সেখান দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছে।’

শহিদুল্লার আত্মীয় সালাউদ্দিন শিমুল একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সিভিল ড্রেসের পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং আটকের সময় হাতাহাতি হয়।’

চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘সৈয়দ শহিদুল্লাহ আদালতে দায়ের করা একটি মামলার আসামি ছিলেন এবং ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। রাতে ২ জন অফিসার শহিদুল্লাকে তার বাড়ির কাছে আটক করে থানায় নিয়ে যান। থানায় আসার পর তিনি বুকে ব্যথার কথা বলেন। পুলিশ তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেয় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স কল করে। অ্যাম্বুলেন্স দেরি হওয়ায় আমার ফোর্স ও শহিদুল্লার ভাই তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

ওসি বলেন, ‘প্রথমে তাকে পার্ক ভিউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তারপর চমেকে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে রাত ১১টা ১৫ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

ওসি দাবি করেন, ওনাকে গ্রেপ্তারের পর খারাপ লাগছে বলে জানান। তখন আমার কক্ষে এনে বসিয়েছি। পরে তার ভাইদের জানিয়ে তারাসহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ৭-৮ বছর আগে শহিদুল্লার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল।

শহিদুল্লার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের পরিদর্শন শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর