সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আওয়ামী লীগ

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত: সন্দেহ বিএনপির, বিস্মিত আ.লীগ


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১২ অক্টোবর, ২০২২ ১০:০৭ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

ব্যাপক অনিয়ম ও কেন্দ্র দখলের কারণে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিতের কারণ নিয়ে নানা মহলে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট স্থগিতের পর সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে কমিশনের (ইসি) সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। অপরদিকে ভোটগ্রহণ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্মিত হয়েছে আওয়ামী লীগ।

বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, একটি আসনের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেখানে একইদিনে সারাদেশে ৩০০ আসনে ভোট গ্রহণে মাঠ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ হবে ইসি। এছাড়া নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিয়ে বিরোধী দলকে ভোটে আনতে ইসি বিশেষ উদ্দেশ্যে উপনির্বাচন বন্ধ করতে পারে বলেও সন্দেহ বিএনপির।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল গণমাধ্যমকে বলেন, গাইবান্ধার নির্বাচনে আবারো প্রমাণ হয়েছে এই কমিশন নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণে ব্যর্থ। যারা ১৪৫ কেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তারা হাজার হাজার কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেবে কিভাবে? মানুষ যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন সেই দাবিতে বিএনপি এখন আন্দোলন করছে। বিএনপির আন্দোলনের যৌক্তিকতা যারা প্রশ্ন তোলেন তারা গাইবান্ধা থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।

ইসির সক্ষমতা না থাকলে নির্বাচন বন্ধ করলো কীভাবে-এ প্রসঙ্গে এই বিএনপি নেতা বলেন, এটা বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে টোপ দেখানো হতে পারে বলেও দাবি তার।

হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন- ইসি যে সরকারের কথায় চলে না এমন বার্তা দিতে জনগণের আস্থা পেতে এটি ষড়যন্ত্রও হতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কোনো কাজে সফল না হলেও তিনি অব্যাহতভাবে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। তিনি একটি আসনে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সেখানে একইদিনে দিনে সারাদেশের ভোটকেন্দ্রে কিভাবে নিরাপত্তা দেবেন সে প্রশ্ন এখন সবখানে। এছাড়া নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে ভোট বন্ধ করে বিরোধীদের নজরে আসতেও ইসি একটি করেছেন কিনা সে প্রশ্ন তো আছেই।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেন, আজকের নির্বাচনের কোনো ভোটকেন্দ্রে গোলযোগ কিংবা বিশৃঙ্খলা হয়েছে, এমন কোনো খবর নেই। এমনকি কোনো ভোটকেন্দ্রে ন্যূনতম মারামারিও হয়নি।

তিনি বলেন, তারপরও প্রথমে কিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে আবার সব কেন্দ্রে স্থগিত এবং সবশেষে গোটা নির্বাচনই স্থগিত করা হয়েছে। এটা কেন করা হলো- সেটা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এই ভোট বন্ধ হওয়া আশ্চর্যজনক।

এদিকে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন অভিযোগ করেছেন, বিরোধীদলকে খুশি করতেই এই নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লো জালিয়াতি, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত

প্রসঙ্গত গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচন। গত ২৩ জুলাই জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়।

এই আসনে মোট পাঁচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবার রহমান।

ভোট মনিটরিংয়ে তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটারের এই আসনে ১৪৫ কেন্দ্রের সবগুলোতেই এবার সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল।

ঢাকার নির্বাচন ভবনে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হয় কেন্দ্রের পরিস্থিতি।

গোপন কক্ষে অবৈধভাবে একাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন ঘটনা সরাসরি দেখার পর বেলা একটা পর্যন্ত কয়েক দফায় ৫১ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

অনেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বেলা দুইটার পর নির্বাচন স্থগিত করেন।

এছাড়া ভোট শুরুর পর থেকেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ ছিল অন্য চার প্রার্থীর। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান ছাড়া বাকিরা ভোটে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগে দুপুর ১২টার দিকে ভোট বর্জন করেন।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর