চট্টগ্রামে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করতে চেয়েছিল নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড় কিংবা লালদীঘি জেলা পরিষদ চত্বরে। এ দুটি স্থানের একটিতে অনুমতির জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ বিএনপিকে আরও বড় পরিসরে সমাবেশ করতে টাইগারপাস রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুমতি দিয়েছে। অথচ বিএনপি অনুমতি না পাওয়ার আশঙ্কায় পলোগ্রাউন্ড মাঠের জন্য আবেদন করেনি।
পুলিশের সহায়তায় পলোগ্রাউন্ড মাঠে সমাবেশের অনুমতি পেয়ে উচ্ছ্বসিত চট্টগ্রাম বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বুধবার দুপুর ২টায় পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় এই সমাবেশ শুরু হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে অংশ নেবেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সকল সদস্যও এই সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এই সমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে এবং নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ১০ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় দলটি।
দীর্ঘ ১০ বছর পর পলোগ্রাউন্ড মাঠে বড় পরিসরে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি।
এর আগে ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিশাল সমাবেশ করেছিল বিএনপি। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। বিএনপি নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, সেই সমাবেশে ১০ লাখ লোক সমাগম হয়েছিল।
দীর্ঘ ১০ বছর পর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আবারও সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। এবারও সমাবেশে ১০ লাখ লোক সমাগম হবে বলে আশা করছেন বিএনপি নেতারা।
সমাবেশের আগে আজ সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলের একটি টিম পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর পর আমরা আবারও পলোগ্রাউন্ড মাঠে সমাবেশ করতে যাচ্ছি। আমরা ধারণা করছি, এবারও পলোগ্রাউন্ড মাঠে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে। শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীরা নয়, সাধারণ মানুষও এই সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারকে জবাব দিবে।’
আবেদন না করা সত্ত্বেও পুলিশ কেন পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপিকে সমাবেশের সুযোগ দিলো-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমাবেশে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে। পুলিশ হয়তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে আমাদেরকে পলোগ্রাউন্ডে নিয়ে গেছে। এটা পুলিশের একটা পজিটিভ দিক।’
এ বিষয়ে জানতে সিএমপি কমিশনার কৃঞ্চপদ রায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘সমাবেশে বিরানির প্যাকেট দেওয়া হবে না, গাড়িও দেওয়া হবে না। এরপরও বিএনপির কর্মসূচিতে মানুষ পঙ্গপালের মতো ছুটে আসবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘সমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটা থানায় থানায় আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। বিএনপির এই সমাবেশে যোগ দিতে নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও উন্মুখ হয়ে আছে।’