বিএনপি বাংলাদেশের বিষয়ে বিদেশে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘লবিস্ট নিয়োগ করেছেন একজন প্রবাসী।’
তবে উন্নয়ন সহযোগীদেরকে দেশের পরিস্থিতি জানাতে চিঠি দেয়ার কথা স্বীকার করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই চিঠির সঙ্গে লবিস্ট নিয়োগের কোনো সম্পর্ক নেই।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আজ আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে, সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের লবিষ্ট নিয়োগে অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত পদক্ষেপকে ধামাচাপা দিতে সরকার জনগণের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ভাষ্যমতে সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে।’
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, বিএনপির বিরুদ্ধে ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংশ্লিষ্টতায় ৯০ লাখ টাকা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল আওয়ামী লীগ।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘বিএনপি জানতে চায়, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ওই টাকার উৎস কী ছিল? কীভাবে ওই টাকা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিল?’
বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের চিঠি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিদেশে লেখা আমার ওই চিঠিসমূহ কোনো লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান মাত্র।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, সরকার জড়িত না থাকলে তা প্রমাণের জন্য তারা ওই সাত কর্মকর্তাকে (র্যাবের বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তা, যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে) আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করত। খুন, গুম, গায়েবি মামলা দায়ের বন্ধ করে, নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হেঁটে সরকার পদত্যাগ করতো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার গুমের শিকার পরিবারের বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, খুনিদের রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যা থেকে প্রমাণ হয়, সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা এই সব খুন-গুমের সঙ্গে জড়িত। তাই বিএনপি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ চায়। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা চায়, গণতন্ত্র ফেরত চায়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।’
