বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৫ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

খাবার কেনার টাকার জন্য মেয়েকে বিক্রি করলো বাবা, মায়ের আহাজারি


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১ জানুয়ারি, ২০২২ ৪:৩১ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে কুঁড়েঘরের বিস্তীর্ণ বসতিতে বাস্তুচ্যুত মানুষদের বসবাস।

সেখানকার একজন নারী তার ১০ বছরের মেয়ে কান্দি গুল’কে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

আজিজ গুল নামের ওই নারীর স্বামী ১০ বছরের মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছেন।

জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য নিরুপায় ওই বাবা তার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে কিছু অর্থ পেয়েছেন।

দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজিজ গুলের স্বামী হামিদ আবদুল্লাহর মতো আফগানিস্তানের অনেকেই অভাবের কারণে এ ধরনের হৃদয় বিদারক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যদের বিশৃঙ্খল প্রত্যাহারের মধ্যে গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে তালেবান যখন ক্ষমতা দখল করে, তখনই সাহায্য-নির্ভর দেশটির অর্থনীতি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: বিবাহ বিচ্ছেদ: স্ত্রীকে ৫ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা দেবেন দুবাই প্রধানমন্ত্রী

এদিকে ২০ বছর আগে তালেবানের শাসনামলে বর্বরতার অভিজ্ঞতা থেকে এবার তালেবান সরকারের সাথে কাজ করতে অনিচ্ছুক আন্তর্জাতিক মহল।

সে কারণে আফগানিস্তানে বিদেশি সাহায্যও স্থগিত রয়েছে।

যদিও খুবই অল্পবয়সী মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করা পুরো অঞ্চল জুড়ে একটি নিয়মিত অভ্যাস।

সেখানে বরের পরিবার প্রায়শই দূরের আত্মীয়রা হয়ে থাকে।

বিয়ের ব্যাপারে চুক্তি করার জন্য অর্থ প্রদান করে তারা।

কন্যাশিশুরা সাধারণত তার বাবা-মায়ের সাথে থাকে তার বয়স কমপক্ষে ১৫ বা ১৬ বছর না হওয়া পর্যন্ত।

এমনকি মেয়ের বয়স ১৫ কিংবা ১৬ বছর হওয়া পর্যন্ত অনেক পরিবার অপেক্ষা করতে পারে না।

কারণ, এতোদিন পর্যন্ত মেয়েকে বাড়িতে রেখে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য তাদের নেই।

আরও পড়ুন: পরিচয় জানা গেলো সেই আইসক্রিমওয়ালার, যার ভক্ত দেড় মিলিয়ন (ভিডিও)

পুরুষ নিয়ন্ত্রিত সমাজে মেয়েকে সম্পূর্ণভাবে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন গুল।

তিনি বলেছেন, ১৫ বছরের আগে আমার মেয়েকে কেউ নিয়ে গেলে আত্মহত্যা করবো।

গুল আরও বলেন, দুই মাস আগে আমার মেয়েকে আমার স্বামী বিক্রি করেছে।

ওই ঘটনার পর পরিবারের সদস্যরা খেতে পারছে।

তবে মেয়েকে কোনোভাবেই এতো অল্প বয়সে হারাতে চান না তিনি।

গুল বলেন, স্বামীর কাছে জিজ্ঞেস করেছি-খাবার কেনার টাকা সে কোথায় পেলো?

পরে জানতে পারি, সে আমার মেয়েকে বিক্রি করেছে বিয়ে দেয়ার জন্য। কথাটি শুনে আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। আমার বারবার মনে হচ্ছিল, ওই সময় মরে গেলেই ভালো হতো। কিন্তু আল্লাহ হয়তো এখনই আমার মৃত্যু দিতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, স্বামীর কাছে জানতে চেয়েছি, কেন সে এমন করলো?

সে শুধু বলেছে, একজনকে হারিয়ে বাকিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। আমি বলেছি, তুমি যা করেছ, তার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো ছিল। আমি এই খাবার খেয়ে বাঁচতে চাই না।

আরও পড়ুন: মাত্র ৬০ টাকায় কোটিপতি ভ্যানচালক ফজলে মিয়া

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর