বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ | ১৭ রমজান, ১৪৪৫

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

৬৫ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর সুস্থ হলো ১২ বছরের সুরাইয়া


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ১:০৯ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

৬৫ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মাত্র ১২ বছরের এক বালক সুস্থ হয়ে ফিরেছে।

এমন ঘটনা শুধু ভারতে নয়, এশিয়ায়ও প্রথম।

লক্ষ্ণৌ থেকে উত্তর প্রদেশের বালক সুরাইয়া কুমারকে আকাশপথে উদ্ধার করে নেয়া হয়েছিল হায়দরাবাদে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তাকে এক্সট্রাকরপোরাল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন (ইসিএমও) নামক লাইফ সাপোর্টে পাঠানো হয়।

কিন্তু চার মাসের কিছু বেশি সময় জীবনের সঙ্গে লড়াই করতে করতে সে এখন পুরোপুরি সুস্থ। তার ফুসফুস প্রতিস্থাপন করতে হয়নি।

সুরাইয়া কুমারের এই সুস্থতাকে তার পিতামাতার জন্য বড়দিনের উপহার হিসেবে মনে করছেন অন্যরা।

আগস্টে তাদের সন্তান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে করোনা শনাক্ত হয়নি। ফলে নিউমোনিয়া হয়ে যায় সুরাইয়া কুমারের।

তারপর থেকে তার পিতামাতার দুর্ভোগ আর দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। তবু আশা নিয়ে তারা তাকে ভর্তি করান হায়দরাবাদের কৃষ্ণ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে (কেআইএমএস)।

আরও পড়ুন: পরিচয় জানা গেলো সেই আইসক্রিমওয়ালার, যার ভক্ত দেড় মিলিয়ন (ভিডিও)

কেআইএমএসে ওই সময় নিজের ট্রেইনারের সঙ্গে ফিজিওথেরাপি নিচ্ছিল সুরাইয়া কুমার।

এ সময় তার মা রেনু শ্রীবাস্তব আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, এই হাসপাতালের চিকিৎসক এবং প্যারামেডিকেল স্টাফদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা শুধু আমার ছোট্ট ছেলেটিকে জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন এমন নয়। তারা একই সঙ্গে আমাকে পূর্ণ জীবন দান করেছেন।

তার স্বামী রাজিব সরণ লক্ষ্ণৌতে একজন আইনজীবী।

তিনি বলেছেন, ভারতের জনগণ জানেন যে, ডাক্তার এবং প্যারামেডিকরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। লক্ষ্ণৌতে কোনো ইসিএমও নেই। ইসিএমও সম্পর্কে অন্য অনেকের মতোই আমি জানতাম না। এটা আমার ছেলের জীবন রক্ষা করেছে। ভারতে এমন চিকিৎসক এবং স্টাফ থাকার জন্য আমি খুবই গর্বিত। আমার ছেলে যখন আইসিইউতে, তখন তারা অবিরাম তাদের ডিউটি পালন করে গেছেন।

আগস্টে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুরাইয়া কুমারের অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে।

তাই আকাশপথে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হায়দরাবাদে। সেখানে তাকে ভেন্টিলেটরে, পরে ইসিএমও’তে রাখা হয়।

এটি এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে হার্ট-ফুসফুস বিষয়ক একটি মেশিনে রক্ত পাঠানো হয়। এই মেশিনটি শরীরের বাইরে স্থাপন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে পুরো শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন: মাত্র ৬০ টাকায় কোটিপতি ভ্যানচালক ফজলে মিয়া

এক পর্যায়ে সুরাইয়া কুমারের ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তা ছাড়াই ৬৫ দিন আইসিইউতে রাখার পর পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে সে।

সুরাইয়া কুমার এখনই বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। তার মধ্যে বেশ কৌতুহল এবং শক্তি দেখা গেছে।

একটি ইচ্ছা পূরণ করতে চায় সে। তা হলো, তার আইকন ভারতীয় ক্রিকেটার এমএস ধোনির সাক্ষাত পাওয়া।

এর আগে ইসিএমও’তে ১০৯ দিন থাকার পর চেন্নাইয়ের ৫৬ বছর বয়সী একজন পুরুষ সুস্থ হয়েছেন। তারও কোনো ফুসফুস প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হয়নি।

তার নাম মুদিজ্জা। তখন চিকিৎসকরা তার বেঁচে থাকাকে একটি জীবন্ত মিরাকল হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। ইসিএমও সাপোর্টে ৯ সপ্তাহের বেশি সময় থাকার পর কোনো ব্যক্তির ফুসফুস প্রতিস্থাপন ছাড়া সুস্থ হননি।

সেক্ষেত্রে এই ব্যবস্থায় বেঁচে থাকা পুরো এশিয়ায় প্রথম শিশু সুরাইয়া কুমার। করোনাভাইরাসে সংক্রমণের কারণে তার বহুবিধ অঙ্গে সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল।

সূত্র: এনডিটিভি

আরও পড়ুন:  ব্যবসায়ীর বাড়িতে আলমারিতে মিললো ১৫০ কোটি টাকা

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর