শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভোক্তারা

কিষোয়ানের বিস্কুটের ভেতরে দেড় ইঞ্চি লম্বা হিজাব পিন!


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ৬:১৫ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ শ্যামলী আবাসিক এলাকায় ৯ বছরের এক শিশু খাওয়ার জন্য একটা টোস্ট বিস্কুট হাতে নেন। মুখে নেওয়ার আগে দুই হাতে বিস্কুটটি ভাঙতেই দেখা মিললো, দেড় ইঞ্চি লম্বা একটা হিজাব পিন!

বিস্কুটের ভেতরে এতো বড় পিন দেখে ভয়ে আঁতকে ওঠে শিশুটি।

এ দৃশ্য দেখে শিশুটির বড় বোন শারমিন আক্তার শিউরে ওঠেন।

শারমিন আক্তার জানান, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় একটা দোকান থেকে কিষোয়ান স্ন্যাকস লিমিটেডের এই টোস্ট বিস্কুটের প্যাকেট তিনি কিনে আনেন। বিস্কুটের প্যাকেট খুলতেই এ কাণ্ড ঘটে।

শারমিন আক্তার আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘যদি শিশুটা পিনসহ বিস্কুটটা মুখে নিয়ে খেয়ে ফেলতো তাহলে কী অবস্থা হতো? এরকম একটা নামকরা কোম্পানিও যে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিস্কুট উৎপাদন করে সেটা বুঝা গেলো। নামকরা কোম্পানিগুলোর কারখানায় প্রশাসনের প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা উচিত।’

চট্টগ্রামে বেকারি ব্যবসায় শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত কিষোয়ান গ্রুপ।

বিস্কুট উৎপাদনে প্রতিষ্ঠানটি গুণগত মানের কথা বাজারে প্রচার করলেও বাস্তবে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র।

কিষোয়ান বেকারির পণ্যে ভোক্তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিষোয়ান গ্রুপের এক্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার (এডমিন) কফিল উদ্দিন চৌধুরী রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের বেকারির পণ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় পাঁচ গ্রাম ওজনের বেশি কোনো ধাতু থাকলে তা ডিটেক্টরে ধরা পড়ে। কিন্তু পাচঁ গ্রাম ওজনের বেশি হিজাব পিন কীভাবে বিস্কুটের ভেতরে ঢুকে গেলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রসেসিংয়ে কোনো ত্রুটি আছে কি না সেটা আমরা খতিয়ে দেখবো।’

চট্টগ্রাম নগরীর নাসিরাবাদের বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত কিষোয়ান স্ন্যাকস লিমিটেডের কারখানা।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর নাসিরাবাদের বিসিক শিল্পনগরীতে কিষোয়ানের কারখানায় অভিযান চালিয়েছিল র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারখানায় দেখতে পান, অত্যন্ত নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারি সামগ্রী তৈরি হচ্ছে। এখানকার কর্মীরা হাতে গ্লাভস ব্যবহার না করেই খালি হাতে ময়দার খামি থেকে বিস্কুট তৈরি করছে। ময়দার খামিরে পড়ে ছিল ময়লা। অত্যন্ত নোংরা কালো পুরাতন তেল পাওয়া যায়, যা দিয়ে বেকারি সামগ্রী তৈরি হচ্ছিলো।

এই অপরাধে কিষোয়ান স্ন্যাকস লিমিটেডকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পরও কিষয়োনের কারখানার পরিবেশ ও পণ্যের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ভোক্তাদের মধ্যে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক মো. দিদার হোসেন রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘বিস্কুটের মধ্যে পিন বা ধাতব বস্তু পাওয়া গেলে ওই প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মান প্রশ্নবিদ্ধ। এটা ভোক্তার জন্য চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিও বটে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।’

কিষোয়ান গ্রুপের কর্ণধার হলেন সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মোতালেব সিআইপি। পাশাপাশি তিনি বনফুল গ্রুপেরও কর্ণধার। তার ছেলে শহীদুল ইসলাম হলেন কিষোয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

আরও পড়ুন:

প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদনের সময় বাড়লো

যে ৫ শর্তে বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নির্ধারণ করলো সরকার

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর