রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫১ অপরাহ্ণ
‘বিএসএফকে (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) সাইজ করার জন্য আমিই অ্যানাফ (যথেষ্ট)’—এমন কথা বলেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। এ সময় সাধারণ মানুষকে নো ম্যানস ল্যান্ন্ডে (সামরিক শক্তির সীমান্তবর্তী এলাকা) না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাখেরআলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে চৌকা সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
সীমান্তে চোরাচালান রোধ ও জনসাধারণের নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা জিরো লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, আপনাদের (সাধারণ মানুষ) এখানে আসার দরকার নেই। আমি অ্যানাফ (যথেষ্ট) এই বিএসএফকে সাইজ করার জন্য।’
বিজিবি অধিনায়ক বলেন, ‘যখন আমার প্রয়োজন হবে, তখন আমি বলবো আমার গ্রামবাসীকে নিয়ে আসো, আমরা সাইজ করি। আমি না ডাকলে আপনারা ওখানে এসে আমাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাবেন না। আমাদের হাতে অস্ত্র আছে, আমাদের ট্রেনিং আছে। সর্বশেষ আমাদের মনোবল আছে এবং আমাদের পেছনে ১৮ কোটি মানুষ আছে। ১৮ কোটি মানুষ থাকতে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ আছে? কোনো কারণ নেই।’
গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বিজিবি হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক। বিজিবি যখন শূন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবে, তখন আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন বর্ডার সিকিউরড। বর্ডারের নিরাপত্তা আছে। যেকোনো কাজে আপনারা আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা পাবেন।’
সম্প্রতি ওই সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ উত্তেজনা দেখা দিলে গ্রামবাসী এগিয়ে আসায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান বিজিবি অধিনায়ক। বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ দিতে চাই চৌকা এবং কিরনগঞ্জ গ্রামবাসীর প্রতি। আপনারা বিজিবির সঙ্গে ছিলেন, পাশে ছিলেন। এ জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। শুধু শিবগঞ্জবাসী নয়, পুরো ১৮ কোটি মানুষ বিজিবির সঙ্গে ছিল।’
মতবিনিময় সভায় শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজহার আলী, শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া, শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি চৌকা সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বিএসএফ সদস্যরা তাদের সীমান্তবর্তী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্ত সুরক্ষার নামে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করেন। এতে বাধা দেন বিজিবি সদস্যরা।
এ সময় তাদের সঙ্গে জড়ো হন বাংলাদেশি গ্রামবাসীও। পরে বিজিবির বাধায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তারকাঁটার বেড়া নির্মাণ বন্ধ করলেও ১০ দিন পর ১৮ জানুয়ারি সীমান্তবর্তী জমির গম কাটাকে কেন্দ্র করে আবারও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের সীমান্তবর্তী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে আমবাগানের গাছ কাটেন।
এ সময় বাংলাদেশের ফসলি জমিও নষ্ট হয়। এতে আবারও দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বাংলাদেশিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত পাহারা দিলেও বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশিদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। এতে আহত হন দুই বাংলাদেশি যুবক। এ সময়ও বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হলে বিএসএফ এই সংঘর্ষের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। বর্তমানে অবশ্য সীমান্তে কোনো উত্তেজনা নেই।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ