রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ আগস্ট, ২০২৪ ২:০৪ : অপরাহ্ণ
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ছয় সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও অর্থমন্ত্রী ইয়েলেনের কাছে লেখা এক চিঠিতে তারা এই আহ্বান জানান।
চিঠিতে এসব আইনপ্রণেতা শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানান আইনপ্রণেতারা।
গত ৭ আগস্ট লেখা ওই চিঠিতে কংগ্রেসের উভয় কক্ষ সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা স্বাক্ষর করেছেন। তারা হলেন-লয়েড ডগেট, এডওয়ার্ড জে মার্কি, উইলিয়াম আর কিটিং, ক্রিস ভন হলেন, জেমস পি ম্যাকগভার্ন ও অল গ্রিন।
চিঠিতে কংগ্রেস সদস্যরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ বিক্ষোভকারীদের ওপর নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালায়। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালাতে ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেন। এর ফলে সৃষ্ট সহিংসতায় ওই দিন প্রায় ১০০ মানুষ নিহত হন। শেখ হাসিনা আবার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেন এবং বন্ধ করে দেওয়া হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে বাংলাদেশি–আমেরিকানরা তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে আরও একবার যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
আইনপ্রণেতারা বলেন, বিক্ষোভের সময় বেশির ভাগ সহিংসতার জন্য দায়ী দুই বাহিনী-পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এর দায়ভার আসাদুজ্জামান খানের ওপর। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগকে ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের’ ওপর হামলা করতে পাঠান এবং ‘দেখামাত্র গুলি’ করার নির্দেশও দেন তিনি।
কংগ্রেস সদস্যরা বলেন, সরকারি চাকরিতে অন্যায্য কোটাব্যবস্থার প্রতিবাদে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে গত ১৫ জুলাই পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করে আওয়ামী লীগ। পরবর্তী সপ্তাহজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘অসংগতিপূর্ণ ও বেআইনি বলপ্রয়োগ’ করে। রাবার বুলেট, ছররা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও তাজা গুলি ছোড়ে।
আইনপ্রণেতারা বলেন, বিস্তৃত পরিসরে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের চালানো দমন-পীড়নেরই অংশ এসব ঘটনা। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দলটির নেতাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলেও তাদের জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ‘গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যাক্ট’সহ প্রয়োগ উপযোগী সব আইনের আওতায় ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানান কংগ্রেস সদস্যরা।
আরও পড়ুন:
আ.লীগের কেন্দ্রীয় অফিস এখন ছাত্র-জনতার কার্যালয়
সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি
শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার শেষ চার ঘণ্টা যা ঘটেছিল
আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিরা কে কোথায়