শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ | ১৪ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২১ জিলহজ, ১৪৪৫

মূলপাতা আইন-আদালত

এমপি আনার হত্যা

নেপালে আটক সিয়ামকে হেফাজতে নিলো কলকাতা সিআইডি


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৭ জুন, ২০২৪ ২:০৪ : অপরাহ্ণ
আনোয়ারুল আজিম আনার ও হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন সিয়াম হোসেন (ডানে)।
Rajnitisangbad Facebook Page

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আখতারুজ্জামান শাহীনের সহযোগী নেপালে আটক সিয়াম হোসেনকে হেফাজতে নিয়েছে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ (সিআইডি)।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে পালিয়ে ছিলেন। তাকে নেপাল পুলিশ আটক করে। কলকাতার সিআইডি তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

সম্প্রতি এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেনকে নেপালে আটক করা হয়। তার বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। তিনি হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।

আরও পড়ুন: এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিয়াম নেপালে আটক

নেপালে সিয়াম হোসেনের আটকের খবরে গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সেখানে যান।

কিন্তু নেপালে গিয়ে সিয়াম হোসেনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি ডিবি পুলিশ।

নেপাল থেকে ফিরে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নেপাল থেকে সিয়ামকে নেওয়ার জন্য ভারতও চেষ্টা করছে, তাদের কাছেও সিয়াম মোস্ট ওয়ান্টেড। বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। ভারতের সঙ্গে নেপালের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। নেপাল কাঠমান্ডু অ্যাক্ট অনুযায়ী অপরাধের ধরণ এবং স্থান বিবেচনা করে ঠিক করবে সিয়ামকে কার কাছে দেওয়া হবে। ’

ডিবি প্রধান বলেন, ‘সিয়ামকে ভারত কিংবা বাংলাদেশ যার কাছেই হস্তান্তর করা হোক না কেন, তদন্তে কোনো সমস্যা হবে না। সিয়ামকে পেলে আলামত উদ্ধারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।’

আনার হত্যার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত ১৩ মে কলকাতায় সংসদ সদস্য আনার হত্যার পর লাশ গুমের ক্ষেত্রে সিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি কলকাতা থেকে নেপালে পালিয়ে যান। আক্তারুজ্জামান শাহীনও ২০ মে ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু যান। পরে সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৭ মে থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি জিডি করেন সেখানকার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কাছে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দেন।

নিখোঁজের ১০ দিন পর গত ২২ মে সকালে ভারতীয় গণমাধ্যমে এমপি আনার খুন হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। খবরে বলা হয়, এমপি আনারকে ১৩ মে রাতে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন করা হয়। এরপর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়।

এমপি আনারকে হত্যার ঘটনায় ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পাশাপাশি ভারতের কলকাতার নিউ টাউন থানায় সেখানকার পুলিশ একটি মামলা করেছে।

হত্যাকাণ্ডের বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কলকাতা পুলিশ মরদেহের কোনো ক্লু পাচ্ছিলো না। পরে নিজেদের গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কলকাতায় পা দেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ও তার প্রতিনিধিদল।

এরপর ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের অনুরোধে কলকাতার সিআইডি পুলিশ গত ২৮ মে সঞ্জীবা গার্ডেন্সের ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযানে সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের টুকরো টুকরো কিছু মাংস উদ্ধার করা হয়। মরদেহের এসব মাংস এমপি আনারের বলেই ধারণা ডিবি ও পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির।

তবে সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত হতে মরদেহের মাংসগুলোর ডিএনএ ও ফরেনসিক টেস্টের প্রক্রিয়া চলছে এখন। হত্যা রহস্যের জট খুলতে আরও গভীর তদন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো।

আরও পড়ুন: 

এমপি আনার খুন: সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে মিললো মরদেহের টুকরো

এমপি আনারের মরদেহ কিমা করে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা হয়: ডিবি প্রধান

এমপি আনার ফ্ল্যাটে ঢুকলেন পায়ে হেঁটে, বের হলেন টুকরো টুকরো হয়ে

৫০০০ টাকায় এমপি আনারের দেহ ৮০ টুকরো, কসাই জিহাদের লোমহর্ষক বর্ণনা

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে এমপি আনার খুন, নেপথ্যে…

 ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ছিল এমপি আনারের বিরুদ্ধে

এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর