শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা ধর্ম

আজানের পর যে ৪টি আমল করলে মিলবে অফুরন্ত সওয়াব



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৪:০৮ অপরাহ্ণ

আজান শব্দের অর্থ হচ্ছে ডাকা, আহবান করা। জামাআতের সহিত নামাজ আদায় করার লক্ষ্যে মানুষকে মসজিদে একত্রিত করার জন্য আরবি নির্দিষ্ট শব্দ ও বাক্যের মাধ্যমে উচ্চকণ্ঠে ডাক দেওয়াকেই আজান বলা হয়।

রাসুল (সা.) মদীনায় হিজরতের পর আজানের প্রচলন হয়। যিনি আজান দেন তাকে মুয়াজ্জিন বলা হয়। হাদিসে আজানের জবাব দেওয়ার বিষয়ে অনেক সওয়াবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আজানের জবাবে কী বলতে হয়

আজান শোনে মৌখিকভাবে উত্তর দেওয়া সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, তখন জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি, হাদিস নম্বর-৬১১)

আজান সম্পর্কে রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনকে যখন আজান দিতে শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যা যা বলবে তোমরাও তাই বলবে।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নম্বর- ১/২২১, সহীহ মুসলিম, ১/২৮৮)

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেছেন, ‘‘আমরা রাসুল (সা.) এর কাছে ছিলাম। তখন হযরত বেলাল (রা.) দাঁড়িয়ে আজান দিলেন। বেলাল (রা.) আজান শেষ করলে রাসুল (সা.) বললেন, ‘এ ব্যক্তি (মুয়াজ্জিন) যা বললো, তা যদি কেউ দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে বলে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’ (মুসনাদ আহমাদ, ২/৩৫২)

এসব হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, মুয়াজ্জিন যা বলবেন, আজান শ্রবণকারী তাই বলবেন। কোনো ব্যতিক্রম বলতে বলা হয় নি। ফজরের আজানে ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ শুনলে জবাবেও এ বাক্যটিই বলতে হবে।

তবে মুসলিম হাদিসে রাসুল (সা.) একটি ব্যতিক্রম শিক্ষা দিয়েছেন, তা হলো, মুয়াজ্জিন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বললে, শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবেন।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এভাবে যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের সাথে সাথে আজানের বাক্যগুলো অন্তর থেকে বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বর-৩৮৫)

আজানের পর বিশেষ চারটি আমল পালন করলে অফুরন্ত সওয়াব পাওয়া যায়। আমল চারটি তুলে ধরা হলো-

কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করা

হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শোনে এবং আজান শেষে কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করে, তার সকল গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (নাসাঈ, হাদিস নম্বর-৬৭৯)

কালেমা শাহাদাতের উচ্চারণ: ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ। ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ’।
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই।

দরুদ শরিফ পাঠ করা

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছেন, ‘তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শোনো, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বলো। অতঃপর আমার ওপর দরুদ পাঠ করো। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তায়ালা এর বিনিময়ে তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন।’ (মুসলিম, হাদিস নম্বর-৭৩৫)

নিজের জন্য দোয়া করা

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আজান ও ইক্বামতের মাঝে যে দোয়া করা হয়, তা ফেরত দেওয়া হয় না।’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আজান শেষ হলে আল্লাহর কাছে চাও। তখন যা চাইবে তা-ই দেওয়া হবে।’ (আবু দাউদ, মেশকাত)

প্রসিদ্ধ দোয়াটি পাঠ করা

হজরত জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শুনে এ দোয়া পড়বে, কেয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ পাওয়ার অধিকারী হবে।’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নম্বর-৬১৪)

দোয়াটি হলো-‘আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ্‌ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াছ ছালাতিল ক্বায়িমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াবাআছহু মাক্বামাম্ মাহমুদানিল্লাজি ওয়া আত্তাহ।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও আসন্ন সালাতের তুমি মালিক। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওয়াসিলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন। এবং তাকে সেই প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত কর। যার ওয়াদা তুমি করেছো।’

আরও পড়ুন: 

আজান দেওয়ার সময় মুয়াজ্জিন কানে হাত দেয় কেন? 

আজান-ইকামতে রাসুলের নাম শুনে কি আঙুল চুমু খেয়ে চোখে লাগাতে হয়?

প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ু চেপে রেখে নামাজ পড়া যাবে কি?

জোহর ও আসরের ফরজ নামাজে কিরাত চুপেচুপে পড়ার কারণ কী?

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর