রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৫ মার্চ, ২০২৪ ৮:১১ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও রিসার্চ সেন্টারে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী পিএইচপি ফ্যামিলি।
আজ শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৫ কোটি টাকার এই চেক হস্তান্তর করেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক ও হাসপাতালর পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোরশেদ হোসেন এই চেক গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সুফি মিজানুর রহমান বলেন, ‘জীবনের স্বার্থকতা যশ-খ্যাতি, ধন-সম্পদ বা প্রাচুর্যের উপর নির্ভর করে না। মানুষের নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই হলো জীবনের প্রকৃত স্বার্থকতা। তাই আমাদের উচিত সকল শ্রেণির মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করা; তবেই জীবনে প্রকৃত স্বার্থকতা আসবে। জীবন ধন্য হবে।’
বিনয় মানুষকে সম্মানের শিখরে নিয়ে যায় উল্লেখ করে সমাজসেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিল্পপতি বলেন, ‘প্রাচুর্য বা সম্পদশালী হলে, আমরা নিজেদের অতীত ভুলে যাই। অথচ আপনি যত বড়ই হোন না কেন, সেই সঙ্গে যদি বিনয় থাকে তাহলে আপনাকে আরও মহান করবে; সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। জ্ঞানের সঙ্গে বিনয় থাকলে মহাজ্ঞানীর মর্যাদা এনে দেয়। প্রত্যেক মানুষের উচিত শ্রেণিভেদ নয়; মানবসত্ত্বা হিসাবে চিন্তা করা। তখনই আমরা প্রত্যেক মানুষকে শ্রদ্ধা করতে পারবো এবং সকল মানুষের ভালো-মন্দ নিয়ে চিন্তা করতে পারবো।’
সুফি মিজানুর রহমান বলেন, ‘মান-সম্মান, যশ-খ্যাতি ও প্রাচুর্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানত হিসাবে দেওয়া হয়। আমাদের সবকিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। আমরা কেবল কয়েকদিনের আমানতদার। আল্লাহর আমানত কোনভাবেই খেয়ানত করা যাবে না। যারা আল্লাহর প্রদত্ত আমানত খেয়ানত করে অর্থাৎ সঠিকভাবে ব্যবহার না করে তাদের সম্পদ বেশি দিন থাকে না।’
উল্লেখ্য, এর আগে মা ও শিশু হাসপাতালের নতুন ভবনের সপ্তম তলায় ফ্লোর নির্মাণে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলো পিএইচপি ফ্যামিলি। গত ৬ মার্চ পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান এই ফ্লোরের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: মানুষের চিকিৎসা সেবায় কাজ করে যাবে পিএইচপি: সুফি মিজান
পিএইচপি ফ্যামিলি সমাজে নানাভাবে অবদান রেখে চলেছে উল্লেখ করে একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ‘সুফি মিজান সাহেব দানের ব্যাপারে সবসময় এগিয়ে থাকেন। ব্যবসার পাশাপাশি একজন সফল পিতা হিসাবে সন্তানদেরও একই মানসিকতায় গড়ে তুলেছেন; যা বর্তমান সময়ে বিরল। সুফি মিজান সাহেব মানুষের সেবা করতে পারলেই খুশি হন।’
পিএইচপি ফ্যামিলির আর্থিক সহায়তার প্রশংসা করে মা ও শিশু হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন বলেন, ‘এই হাসপাতালে সবচেয়ে বড় অনুদান ১০ কোটি টাকা দিয়েছে পিএইচপি ফ্যামিলি। হাসপাতালের জন্য একটি লিফট দিয়েছেন। ক্যান্সার হাসপাতালের যখন আর্থিক সংকট চলছিল, ঠিক সেই সময়ে ৫ কোটি টাকা অনুদান দিলো পিএইচপি ফ্যামিলি। এতে হাসপাতালের কাজে অনেক গতি আসবে।’
অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার ভিয়েনা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. জেরাল্ড ফুটসেক, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি আবদুল মান্নান রানা, ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ ডা. শেফাতুজ্জাহান বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ নভেম্বর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এই ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়। আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের পাশে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ক্যান্সার ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স দিলো পিএইচপি ফ্যামিলি