রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৯:২৪ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের রাউজানে মোহাম্মদ মুছা (৪৫) নামের এক প্রবাসী বিএনপি নেতাকে মসজিদ থেকে বের করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাউজান পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঢেউয়া হাজীপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ মুছা স্থানীয় মৃত কবির আহমদের পুত্র। দুই সন্তানের জনক মুছা ওমান ওয়াইলজা শাখা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন।
মুসা রাউজান বিএনপির রাজনীতিতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় ছাড়ার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে চলে যান। এরপর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভয়ে তিনি আর এলাকায় আসেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মুছা অনেকটা গোপনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাউজানে নিজ বাড়িতে যান। শুক্রবার দুপুরে বাড়ির মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে দেখে ফেলেন। মুছা নামাজ পড়ে বের হতেই এক আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক তার ওপর হামলা করে এবং বেধড়ক পিটুনি দেয়। পিটুনি খেয়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুছার ভাই তৌফিকুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ভাই গিয়াস কাদেরের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। বিএনপি সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পরই তিনি ওমানে চলে যান। এরমধ্যে কয়েকবার দেশে আসলেও এলাকায় আসেননি। হাটহাজারীর শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। এক মাস আগেই তিনি দেশে এসেছেন। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি তার আবার ওমানে চলে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এই নষ্ট রাজনীতি তাকে বাঁচতে দিলো না।’
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমি আমার ভাইকে নিয়ে এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান ইকবালের সঙ্গে তার শহরের অফিসে দেখা করেছিলাম। তাকে আমার ভাই বলেছিলেন, তিনি আজকে বাবার কবর জিয়ারত করতে এলাকায় যাবেন। তাকে যেন তিনি প্রটেকশন দেন। তিনি আমার ভাইকে কথাও দিয়েছিলেন। আর এখন শুনলাম উনার নেতৃত্বে আজকে জুমার নামাজের পরই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে উনি (শাহজাহান ইকবাল) এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কি না সেটা আমি নিশ্চিত নই।’
তবে রাউজান থানার ওসি জাহেদ হোসেন হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেননি।
তিনি বলেন, ‘মুছা নামের বিএনপির এই নেতা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন আজকে। সেখানে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায় বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘মুছা গিয়াস ভাইয়ের রাজনীতি করতেন। বিগত ১৭ বছর যাবৎ তিনি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কারণে এলাকাছাড়া। তিনি দেশে আসলেও এলাকায় যেতে পারতেন না।দীর্ঘদিন পর গতকাল বাড়িতে গিয়েছেন। আর গিয়েই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বর্বরতার শিকার হয়েছেন। আর এখন হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।’