রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ৬:১৫ অপরাহ্ণ
পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তে এতো পরিমাণ বেসামরিক মানুষ খুন হওয়ার নজির নেই বলে মন্তব্য করেছেন এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
তিনি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বিভিন্ন মাত্রায় প্রায়ই যুদ্ধ হয়, দুই পক্ষেরই সামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। কিন্তু বেসামরিক নাগরিক খুন হওয়ার ঘটনা সেখানে নেই বললেই চলে। ভারত-চীন সীমান্তে কোন বেসামরিক নাগরিকের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস কোন পক্ষই করে না। ইরান-আফগানিস্তান বা পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে প্রচুর মাদক পাচার হয়ে থাকে। কিন্তু হরহামেশাই বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যার ঘটনা সেখানে শোনা যায় না। এমনকি নেপাল, ভুটান সীমান্তেও কোন নাগরিককে হত্যার কথা আমরা শুনিনি।’
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএসএফের গুলিতে বিজিবি’র এক সিপাহী নিহতের প্রতিবাদ, বারবার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ও সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ সীমান্তই মনে হচ্ছে যেন অসহায় বাংলাদেশের মানুষের রক্ত, লাশ আর খুনের সীমান্ত। বিএসএফের ‘দেখামাত্র গুলি’র নীতিই আজকের হাজার হাজার বেসামরিক লোকের হত্যার কারণ বলে আমরা মনে করি।’
১৯৪৬ সালে জারি করা ভারতের বিদেশ আইনের বিধি উল্লেখ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, ‘সে আইনে অবৈধভাবে তাদের দেশে প্রবেশের শাস্তি রাখা হয়েছে পাঁচ বছরের জেল এবং জরিমানা। অথচ আইনের চরম লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রায়ই নির্মমভাবে গুলি করে মারা হয়।’
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের যেহেতু নিজ দেশেই কোনো মর্যাদা নেই, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা তাদেরকে তো খুন করে সীমানার কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখবেই।’
এবি পার্টির এই নেতা বলেন, ‘গত পঞ্চাশ বছরে যে কয়েক হাজার বাংলাদেশী নাগরিককে বিএসএফ হত্যা করেছে তাদের অধিকাংশই গরু ব্যবসায়ী এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কৃষক ও বাসিন্দা।’
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে ভারতের অনেকগুলো রাজ্যের সীমান্ত থাকলেও অধিকাংশ খুন সংগঠিত হচ্ছে বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তে; পশ্চিম বাংলার সাথে। লালমনিরহাট, চুয়াডাঙ্গা, যশোহর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা প্রতিনিয়তই মৃত্যুভয় নিয়ে বেঁচে থাকেন। তিনি অভিযোগ করেন, দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি জনগণের করের টাকায় চললেও সীমান্তে তাঁরা জননিরাপত্তা দিতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন। ইয়াবা, ফেনসিডিল, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান রোধে তাদের ব্যর্থতা চরম, কিন্তু সরকারের লাঠিয়াল হয়ে বিরোধীদলের আন্দোলনে গুলীবর্ষণ করতে তাদের হাত কাঁপে না।’
আরও পড়ুন: যশোর সীমান্তে বিজিবি সদস্যকে গুলি করে মারলো বিএসএফ
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘একটা অবৈধ সরকার যখন জনগণের ম্যান্ডেট ব্যতীত ১৫ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায় থাকে, তখন একটি স্বাধীন, মর্যাদাপূর্ণ স্বকীয় পররাষ্ট্রনীতি প্রনয়ণের মনোবল ও যোগ্যতা তাদের থাকে না।’
জনপ্রত্যাখ্যাত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু, অক্ষম, পরনির্ভরশীল পররাষ্ট্রনীতির কারণে প্রতিনিয়ত দেশের কোটি কোটি মানুষ সীমান্তে হতভাগ্য ফেলানীর মতো কাঁটাতারে ঝুলার অপেক্ষায় আছে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ২ দিন পর বিজিবি সদস্যের লাশ হস্তান্তর, কান্নায় ভেঙে পড়লেন সহকর্মীরা