শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ রবিউস সানি, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে: প্রধানমন্ত্রী


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২১ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:৫২ : অপরাহ্ণ
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কিছু লোক লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের কথা ভাবছে, যা খুবই অমানবিক। জনগণকে হত্যা করে লাশের উপরে পা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা-এমন অমানবিকতা আমি আর কোথাও দেখি না। এটা ভাবতেও অবাক লাগে।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, একটু আশার আলো দেখছিল এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এই অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ মানুষের জীবনকে আবার ব্যাহত করছে। একটা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে কষ্টের বিষয়।’

যারা এই ধ্বংসাত্মক কাজ করছে তাদের বোধোদয় হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ না করে গণতান্ত্রিক ধারায় যোগ দিক, জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখুক।’

সরকার একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ আমরা যেভাবে মোকাবিলা করেছি, এরপরে অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়-সাধারণ মানুষকে কেন পুড়িয়ে মারা হয় সেটাই আমার প্রশ্ন?’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা এটা কী কারণে? আমার কাছে এটা এখনো বোধগম্য নয়।’

বাংলাদেশকে শান্তির অন্বেষক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তি শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আঞ্চলিক এবং সারা বিশ্বব্যাপী আমরা শান্তি চাই।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্তত আমি এটুকু দাবি করতে পারি এ পর্যন্ত আমরা আমাদের এই পররাষ্ট্র নীতি নিয়েই চলেছি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে, আঞ্চলিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আমাদের সমুদ্রসীমা, আমাদের স্থলসীমা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি করে আমাদের রিফিউজিদের ফিরিয়ে আনার মতো ব্যবস্থা আমরা করেছি। সুচারুভাবে আমরা এগুলো করতে পেরেছি। এমনকি ছিটমহলগুলো আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিনিময় করতে পেরেছি। কাজেই বাংলাদেশ শান্তির দেশ।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘’৯৬ সালে সরকারে এসেই আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের দেশের নারী সদস্যরা অনেক সুনাম করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তিনি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আরও নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশা করেছেন।’

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এজন্য গর্বে বুকটা ভরে ওঠে।’

শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করতে গিয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন এ সময় তিনি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশটা আমাদের। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যে কোনো রকমের দুর্যোগ দেখা দিলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সীমিত সম্পদের দেশ হলেও যেখানে দুর্যোগ হোক সে জায়গায় বাংলাদেশ ছুটে যায় এবং মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সেখানে ভূমিকা রাখে।’

’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করিয়ে দিয়ে দেশের ভাগ্যহত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই তার পথচলা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা মা ভাই সব হারিয়েছি, আমার আর হারাবার কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার বাবা যেহেতু সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন তাই বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর