রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:২৩ : অপরাহ্ণ
বছরে কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চট্টগ্রাম চেম্বারকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে গত বৃহষ্পতিবার (১২ অক্টোবর) নোটিশ পাঠিয়েছে এনবিআর।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম চেম্বারের ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সার্কেল-৯ এর একজন কর পরিদর্শককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর অতিরিক্ত কমিশনার মো. আশরাফুল ইসলাম রাজনীতি সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি বরাবর এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত কর কমিশনার আশরাফুল ইসলাম রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে এনবিআর থেকে চট্টগ্রাম চেম্বারকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অডিট রিপোর্ট ও আয়করের হিসাব তদন্ত করতে একজন পরিদর্শককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়কর ক্যালকুলেশন করবো। প্রতিষ্ঠানটির যেসব খাত থেকে আয় হয় এবং এফডিআর থেকে ইন্টারেস্ট বাবদ আয়কর দিতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর রাজনীতি সংবাদে ‘মাসে কোটি টাকা আয় করেও ট্যাক্স দেয় না চট্টগ্রাম চেম্বার’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন-চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স বিভিন্ন খাত থেকে মাসে কোটি টাকা আয় করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে সরকারকে আয়কর (ইনকাম ট্যাক্স) দেয় না চট্টগ্রাম চেম্বার।
আরও পড়ুন: মাসে কোটি টাকা আয় করেও ট্যাক্স দেয় না চট্টগ্রাম চেম্বার
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর চট্টগ্রাম চেম্বারের আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬ লাখ ৭ হাজার ১৯৮ টাকা। এর মধ্যে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের স্পেস ও হলরুম ভাড়া, পুরনো চেম্বার হাউসের ভাড়া, বাণিজ্য মেলা, মেম্বারদের ফি ও চাঁদা এবং অন্যান্য খাত থেকে গত বছর চট্টগ্রাম চেম্বারের আয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানটির এফডিআর আছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। গত বছর এফডিআর থেকে ইন্টারেস্ট বাবদ চেম্বারের আয় হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকা আয় হয় চট্টগ্রাম চেম্বারের।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১-২০২২ সালের চট্টগ্রাম চেম্বারের অডিট রিপোর্টে গত তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটির এফডিআরের ইন্টারেস্ট ও বিভিন্ন আয়ের ওপর ৩ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ৯৮১ টাকার ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। যা প্রভিশন (সঞ্চিত তহবিল) হিসেবে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তবে এর আগের বছরগুলোতে ইনকাম ট্যাক্সের প্রভিশন কত ছিল তা জানা যায়নি।
প্রতি বছর অডিট রিপোর্টে ইনকাম ট্যাক্সকে প্রবিশন করে রাখলেও আয়কর রিটার্ন দাখিল করে না চট্টগ্রাম চেম্বার। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, বার্ষিক হিসাব শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রাম চেম্বারে এমপি লতিফের একি কাণ্ড!
শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম চেম্বারে কী হচ্ছে?