রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩১ আগস্ট, ২০২৩ ১০:৩৬ : অপরাহ্ণ
ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ভালো ক্রিকেট খেলে জিততে চায় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন এমনটাই বলেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ন ভিন্ন। ভালো করা তো দূরে উল্টো তিন বিভাগের ব্যর্থতায় লজ্জার হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে এশিয়া কাপকে পাখির চোখ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতেই গলদ। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারের স্বাদ দিল লঙ্কানরা।
এমন হারে স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক সাকিবের আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারে বাংলাদেশের সুপার ফোরে ওঠা নিয়ে জেগেছে শঙ্কা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প নেই লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
আজ বৃহস্পতিবার পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৬৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। জবাবে নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখিয়ে ৩৯ ওভারেই ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।
১৬৫ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা অবশ্য মন মতো হয়নি স্বাগতিকদের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে অসাধারণ এক ইনসুইংয়ে অভিজ্ঞ ওপেনার দিমুথ করুনারত্নকে বোল্ড করেন তাসকিন। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন করুনারত্নে। তাসকিনের পর আঘাত হানেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম।
দলীয় ১৫ রানের মাথায় নিশানকাকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন শরিফুল। এরপর সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস। তবে দলীয় ৪৩ রানে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মেন্ডিস।
তার বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়লেও তা বেশ ভালোভাবে সামাল দেন আসালাঙ্কা ও সামারাবিক্রমা। এই দুই ব্যাটার বাংলাদেশের বোলারদের শাসিয়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন।
৭৭ বলে ৫৪ রান করে শেখ মেহেদীর বলে সামারাবিক্রমা ফিরলেও আরেক ব্যাটার আসালাঙ্কা ঠিকই ক্রিজে টিকে ছিলেন। অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে সঙ্গী করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। এই জয়ে সুপার ফোরে এক পা দিয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কার খর্ব শক্তির বোলিং লাইনআপের সামনে টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে হতাশ করেন নাঈম শেখ ও অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ব্যর্থ হন তামিম। মাহিশ থিকশানার মিডল স্টাম্পের ওপর করা বল মোকাবিলায় ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে লেগ বিফোরে কাটা পড়েন তিনি। বাংলাদেশের ১৬তম ব্যাটার হিসেবে অভিষেকে শূন্যতে ফিরেন তানজিদ তামিম।
টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার নাঈমও। বারবার সুযোগ হারানো নাঈম ২৩ বলে খেলে ১৬ রানে ফেরেন সাজঘরে। দ্রুত বিদায় নেন ওয়ানডাউনে নামা সাকিবও। ১১তম ওভারে মাথিশা পাথিরানার অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে আউট হন সাকিব (৫)। উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ককে সাজঘরের পথে হাঁটান কুসাল মেন্ডিস।
৩৬ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তাওহিদকে নিয়ে সেই চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন শান্ত। কিন্তু কিছুদূর যেতে তাওহিদও ফিরে যান ড্রেসিংরুম। ছন্দে থাকা তাওহিদকে এলবির ফাঁদে ফেলেন দাসুন শানাকা। ৪১ বলে ২০ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার।
একের পর এক ব্যর্থতার মিছিলে পরের নামটি মুশফিকুর রহিম। পাথিরানার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে তিনিও বিদায় নেন। ২২ বলে ১৩ রান করেন মুশফিক, ১২৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মধ্য কেবল টিকে ছিলেন শান্ত। উইকেটে টিকে থেকে ৬৬ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি।
এরপরও টেলএন্ডারদের নিয়ে দলকে টানেন তিনি। ছুটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু শতকের আক্ষেপ নিয়ে থামতে হয় তাঁকে। ৮৯ রানে গিয়ে শান্ত আউট হন থিকসানার বলে। তাঁর বিদায়ের পর দুইশর নিচেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
শেষ দিকে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ১৬ বলে ৫ রান। শেখ মেহেদির ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। ২ রান করেন শরিফুল।
বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মাথিশা পাথিরানা। দুটি উইকেট নেন মাহিশ থিকসানা। সমান একটি করে নেন ডি সিলভা ও দাসুন শানাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ (নাঈম ১৬, তামিম ০, শান্ত ৮৯, সাকিব ৫, হৃদয় ২০, মুশফিক ১৩, মিরাজ ৫, মেহেদি ৬, তাসকিন ০, শরিফুল ২, মোস্তাফিজ ০ ; রাজিথা ৭-০-২৯-০, থিকসানা ৮-১-১৯-২, ধনঞ্জয়া ১০-০-৩৫-১, পাথিরানা ৭.৪-০-৩২-৪, দুনিথ ৭-০-৩০-১, দাসুন ৩-০-১৬-১)।
শ্রীলঙ্কা: ৩৯ ওভারে ১৬৫/৫ (নিশানকা ১৪, করুনারত্নে ১, মেন্ডিস ৫, সামারাবিক্রমা ৫৪, আসালাঙ্কা ৬২*, ধনঞ্জয়া ২, শানাকা ১৪* ; তাসকিন ৭-১-৩৪-১, শরিফুল ৪-০-২৩-১, সাকিব ১০-২-২৯-২, মোস্তাফিজ ৩-০-১২-০, মিরাজ ৫-০-২৬-০, মেহেদী ১০-০-৩৫-১)