ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এর আগে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালযয়ে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় । তারা কার্যালয়ে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ১৫ জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তানভীর আহমেদ রবিন শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কার্যালয় থেকে বের হন। এরপর মোটরসাইকেলে করে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে রওয়ানা হন। তখন আগে থেকে কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে অবস্থান করা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে ঘিরে ফেলে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে শুনেছি। উপস্থিত অনেক লোক এ ঘটনা দেখেছেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সেটা নিশ্চিত হয়েছি। কিন্তু ডিবি পুলিশ তা স্বীকার করছে না। তুলে নিয়ে গিয়ে স্বীকার না করার এই ব্যাপারটি মনুষ্যত্বহীন কাজ। অথচ এ কাজটি তারা ধারাবাহিকভাবে করছে।’
অবিলম্বে রবিনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান রিজভী। অন্যথায় চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শনিবার পদযাত্রা কর্মসূচির পর বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শনিবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। ঢাকায় শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই বিকেল-সন্ধ্যা থেকে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা শুরু হয়। কার্যালয় থেকে যারাই বের হন, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্য দিয়ে একটি ভয়-আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। কার্যালয়ের ভিতরে যারা অবস্থান করছিলেন, তারা নিজেদের অবরুদ্ধ ও নিরাপত্তাহীন বোধ করছিলেন।’
বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার আগামী নির্বাচনও একতরফা করতে চায়। সে কারণে বিএনপিসহ বিরোধী দল নির্মূলের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাদের বেছে বেছে টার্গেট করে গ্রেপ্তার, হত্যা, গুম করা হচ্ছে। কিন্তু এটা করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। জনগণ জেগে উঠেছে।’
ছাত্রদলের ছয় নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বিএনপির রিজভী বলেন, ‘ছাত্রদলের ৬ নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের চরিত্রে কলঙ্ক লেপনের জন্য, সন্ত্রাসী বানানোর জন্য পরিকল্পনার অংশ হিসাবে হাতে অস্ত্র দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু দেশবাসী এ ঘটনা বিশ্বাস করে না। এটাকে তারা সাজানো নাটক বলে মনে করে।’
আরও পড়ুন: নিখোঁজ ছাত্রদলের সেই ৬ নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখালো ডিবি পুলিশ
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কুমিল্লা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, রাজবাড়ী জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হারুন, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আসলাম মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।