শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা ধর্ম

আল্লামা সাঈদীর মৃত্যুতে যা বললেন ডা. জাকির নায়েক


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২০ আগস্ট, ২০২৩ ১:৪৪ : অপরাহ্ণ
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও ডা. জাকির নায়েক। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে পিস টিভি নেটওয়ার্কের পরিচালক ডা. জাকির নায়েক বলেছেন, ‌‘আমি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সম্পর্কে অবগত আছি। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দাঈদের একজন ছিলেন। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রতি আমার দোয়া। তার মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ এক সম্পদ হারালো।’

গতকাল শনিবার রাতে ডা. জাকির নায়েক তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন। সেখানে একজনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. জাকির নায়েকের ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিটের লাইভ অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে তিনি সাঈদী সম্পর্কে কথা বলেন, যা পাঠকের জন্য বাংলা অনুবাদ করে তুলে ধরা হলো।

ডা. জাকির নায়েক বলেন, ‘আমি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সম্পর্কে অবগত আছি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমি কয়েকদিন আগে খবরটি পেয়েছি যে, তিনি মারা গেছেন। আল্লাহ সুবাহানাতায়ালা তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আল্লাহ সুবাহানাতায়ালা তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন।’

বিশ্বের জনপ্রিয় এই ইসলামী স্কলার বলেন, ‘আমি জানি যে, তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দাঈদের একজন ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। প্রথমে আদালত কর্তৃক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে দেশব্যাপী প্রতিবাদে অনেক লোক মারা গেলে মৃত্যুদণ্ড থেকে রায় পরিবর্তন করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পৃথিবীতে এমন অনেক লোক আছেন-দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন অনেক মুসলিম দেশ আছে যেখানে লোকজনকে শুধু রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদেরই একজন ছিলেন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।’

ডা. জাকির নায়েক বলেন, ‘‘সপ্তাহ দুয়েক আগে তার ছেলে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। তিনি আগেও মালয়েশিয়াতে এসেছিলেন। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। তিনি জানান, তার বাবার একটি বই অনুবাদ করেছেন। আমি তাকে সালাম জানিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটি আল্লামা সাঈদীর মৃত্যুর কয়েকদিন আগে ঘটেছিল। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রতি আমার দোয়া। তার মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ এক সম্পদ হারাল। আমরা জানি যে, আল্লাহর বাণী প্রচারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মহান আল্লাহর দরবারে উনার জন্য দোয়া করি যাতে আল্লাহ উনাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আম্বিয়ায়ে কেরাম এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের সঙ্গে তাকে জান্নাত দান করেন। আমিন।’

প্রসঙ্গত, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর দেশ-বিদেশ থেকে অনেক ইসলামিক পণ্ডিত তার মৃত্যুতে শোক জানান। এবার একজনের প্রশ্নের উত্তরে ডা. জাকির নায়েক তাকে নিয়ে তার মনোভাব এবং শোক প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা যান।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যে অনুষ্ঠিত জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পিরোজপুর শহরের বাইপাস সড়কে সাঈদী ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে অবস্থিত বায়তুল হামদ জামে মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

সাঈদী ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পিরোজপুর-১ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। এর পর থেকে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল।

জানা গেছে, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮২ সালে জামায়াতের রুকন (দলটির পূর্ণাঙ্গ সদস্য) হন। ১৯৮৯ সালে তিনি জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাঈদী ২০০৯ সাল থেকে জামায়াতের নায়েবে আমিরের পদে ছিলেন।

আরও পড়ুন: আল্লামা সাঈদীর জানাজায় মানুষের ঢল

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর